ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

কয়েক টুকরো মাংসের আশায়

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০০, ১৮ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৭:০২, ১৮ জুন ২০২৪
কয়েক টুকরো মাংসের আশায়

ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে

রাজধানীর অভিজাত এলাকার একটি বাড়ির গেটের সামনে অর্ধশতাধিক মানুষের ভিড়। সবাই দাঁড়িয়ে গেটের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ভেতরের দিকে তাকিয়ে আছেন। সবার হাতেই পলিথিন বা ব্যাগ। ভিড়ের কারণে সরু রাস্তাও বন্ধ। তবু কেউ সরছেন না৷ কারণ, সরে গেলেই লম্বা সারির পেছনে পড়ে যেতে হতে পারে।

এসব মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছেন কোরবানির মাংসের জন্য। গেটের সামনে থাকলে নিশ্চিন্তে আগেভাগেই মাংস পাওয়া যাবে। সারির পেছনে পড়ে গেলে মাংস পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে, এ শঙ্কায় কেউ জায়গা ছাড়ছেন না।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) কোরবানির ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি আবাসিক ভবনের সামনে এ চিত্র চোখে পড়েছে।

সেই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, এই বাড়ির এক ব্যক্তি ঈদের প্রথম দিন নিজের পরিবারের জন্য এবং দ্বিতীয় দিন অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য গরু কোরবানি করেন। দ্বিতীয় দিনের কোরবানির মাংস পুরোটাই বিলিয়ে দেওয়া হয় গরিব মানুষদের মাঝে। বিষয়টি আগে থেকেই অনেকে জানেন। সেজন্য স্থানীয়সহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গার নিম্ন আয়ের মানুষ কোরবানির দ্বিতীয় দিনে এখানে ভিড় করেন। দুপুরে কোরবানি করা গরু প্রস্তুত করতে আরও সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

মাংসের জন্য শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তাদের অধিকাংশই নারী। তাদের একজন হামিদা বেগম। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের সময় সবাই প্রতিবেলায় গরুর মাংস দিয়ে ভাত খায়। আমরা তো কোরবানি দিতে পারিনি। সেজন্য একটু মাংসের জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। গতকালও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে মাংস তুলেছি। একটু বেশি মাংস হলে কয়েকদিন নিশ্চিন্তে খাবার খেতে পারব।

ফাতিমা নামের আরেকজন বলেন, সব জায়গায় এক-দুই টুকরো করে মাংস দেয়। এখানে পরিমাণে একটু বেশি পাওয়া যায়। আস্ত গরুই গরিবদের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হয়। সেজন্যই এই বাসার সামনে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। মানুষের ভিড় বেশি। পেছনে পড়ে গেলে গোস্ত পাই কি না, সেই চিন্তায় গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছি।

ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি দিতে দেখা গেছে। প্রথম দিন কসাই না পাওয়া, জায়গার সঙ্কটসহ নানা কারণে যারা কোরবানি করতে পারেননি, তারাই আজ পশু জবাইয়ের মাধ্যমে ফরজ ইবাদত পালন করেছেন। 

এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি গবাদি পশু কোরবানি করা হয়েছে। গত বছর সারা দেশে কোরবানি দেওয়া গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। গত বছরের তুলনায় এবার ৩ লাখ ৬৭ হাজার ১০৬টি বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে।

এমএ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়