ঢাকা     সোমবার   ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৫ ১৪৩১

সারাদেশে ২৬ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে: নৌ প্রতিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৫ জুন ২০২৪  
সারাদেশে ২৬ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে: নৌ প্রতিমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অভিযানে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সারাদেশে ২৬ হাজার ১৮১টি ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং প্রায় ১ হাজার ১৬০.৬২ একর নদীর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান তিনি।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সময়ে নদী দখলের অপতৎপরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বিআইডব্লিউটিএ বিভিন্ন সময় নদীবন্দর সীমানার মধ্যে এবং ক্ষেত্র বিশেষে অন্যান্য নদীর তীরভূমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। প্রায় শতভাগ অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। এখনও বিআইডব্লিউটিএ উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, এই কার্যক্রম ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই বেগবান হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডব্লিউটিএ বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও বালু নদীর তীরভূমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দুই পাশ দখলমুক্ত রাখার লক্ষ্যে তীরভূমিতে ওয়াকওয়ে নির্মাণ চলছে। ওয়াকওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি তীরবর্তী জায়গায় জনগণের জন্য বসার বেঞ্চ, পরিবেশবান্ধব ইকোপার্ক, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বৃত্তাকার ১১০ কিলোমিটার নৌপথের সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, উচ্ছেদকৃত নদীর তীরভূমি যাতে পুনরায় অবৈধভাবে দখল না হয়, সে লক্ষ্যে ‘বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ৭ হাজার ৫৬২টি সীমানা পিলার স্থাপন, ৪৬ হাজার বৃক্ষ রোপণ, ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ১৪টি জেটি, কি-ওয়াল এবং ৩টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। পর্যায়ক্রমে আরও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত রয়েছে। নদীদূষণ রোধে ড্রেজিং বিভাগ বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও তুরাগ নদী থেকে বর্জ্য অপসারণ করেছে। নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষায় প্রতিবছর সংরক্ষণ ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ঢাকার চারদিকে পণ্যবাহী নৌযানের মাধ্যমে ইট, বালু, সিমেন্ট, পাথর এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পরিবহন করা হচ্ছে। চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ঢাকার চারপাশে নদীকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার চারপাশের বৃত্তাকার নৌপথ বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, ধলেশ্বরী এবং শীতলক্ষ্যা নামক পাঁচটি নদী দ্বারা বেষ্টিত বৃত্তাকার নৌপথের মোট দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার। অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য নদীগুলোর তীরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গি ও মিরকাদিমে চারটি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ পরিচালিত এসব অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর নির্বিঘ্নে মালামাল ও যাত্রীবাহী নৌ চলাচলের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। নদীগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক নদীগুলো পুনরুদ্ধারে সকল অংশিদারদের নিয়ে সম্মিলিত একটি আম্ব্রেলা ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউআইপি) প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কাজ চলছে। ইউআইপি বাস্তবায়ন হলে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত হবে এবং পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে।

এএএম/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়