ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

‘আমরা খাল দখল করিনি, যারা করেছে তাদেরকে ধরেন’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ২৭ জুন ২০২৪  
‘আমরা খাল দখল করিনি, যারা করেছে তাদেরকে ধরেন’

‘সাদেক অ্যাগ্রো ১০-১২ বছর ধরে আমাদের জায়গা ভাড়া নিয়ে গরু-ছাগলের খামার চালাচ্ছে। এর মধ্যে একাধিক বার সিটি করপোরেশন, ডিসি অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে খালের এবং আমাদের সীমানা নির্ধারণ করে পিলার বসিয়ে গেছেন। সে অনুযায়ী, আমাদের জায়গা ভাড়া দিয়েছি। আমরা খালের কোনো জায়গা দখল করিনি। যারা দখল করেছে, পারলে তাদেরকে ধরেন।’

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর সাত মসজিদ হাউজিংয়ের ভেতরে রামচন্দ্রপুর খালের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা সাদেক অ্যাগ্রোর জমির মালিকের ভাই আবদুল আলীম রাইজিংবিডিকে এসব কথা বলেন।

আবদুল আলীম বলেন, এই জমির মালিক আমার ভাই আবদুর রশীদ তালুকদার। জমির পরিমাণ ৪ শতক। খরিদ সূত্রে আমরা এই জমির মালিক। সাদেক অ্যাগ্রোর মালিক এমরান আহমেদকে ভাড়া দিয়েছি। খালের পাড়ের জমি বলে কয়েকবার এখানে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু, আমাদের বিল্ডিং এবং কাগজপত্র সব ঠিক থাকায় তারা সীমানা নির্ধারণ করে দেন। আমরা সে সীমানার মধ্যেই আছি।

তিনি বলেন, আমাদের ভবনের পেছন দিকে রিকশার গ্যারেজ, বেশ কয়েকটি টিনের ঘর, দোকান রয়েছে। এসব গ্যারেজ, ঘর ও দোকান থেকে প্রতিমাসে ভাড়া নেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। খালের মাঝখানে এখনও একটি রাজনৈতিক দলের অফিস (আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কার্যালয়) আছে। বেড়িবাঁধ থেকে খালের মুখে আছে একটি গানের স্কুল (সুরের ধারা)। এছাড়াও একটি বহুতল ভবন রয়েছে। পারলে সেগুলোকে উচ্ছেদ করুক।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আব্দুল আলীমের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বৃহস্পতিবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের সাত মসজিদ হাউজিংয়ের রামচন্দ্রপুর খাল দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করে। এ সময় সাদেক অ্যাগ্রো খামারের একাংশ এবং এর পেছনের গ্যারেজ, দোকানসহ কয়েকটি টিনের ঘরের অবশিষ্টাংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তার আগে সকাল থেকেই এসব গ্যারেজ, দোকান ও ঘরের মানুষরা তাদের ঘরের টিন, বাঁশ, কাঠ, আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়।

অপরদিকে, উচ্ছেদের খবরে বুধবার রাতেই সাদেক অ্যাগ্রো খামারের বেশিরভাগ গরু অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অল্প কয়েকটি গরু খামারে দেখা গেছে। খামারের একটি খাঁচায় ১৫ লাখ টাকা দাম হাঁকানো ব্রিটল জাতের ছাগলটি রয়েছে। 

ডিএনসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ বলেছেন, ডিএনসিসির নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর সঙ্গে ‘ছাগলকাণ্ড’র কোনো সম্পর্ক নেই।

উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলম, অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোতাকাব্বির আহমেদ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান। 

অভিযান প্রসঙ্গে ডিএনসিসির নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ বলেন, খাল ও সড়কের জায়গা উদ্ধারে আমরা অভিযান শুরু করেছি। এর আগে কয়েকবার অবৈধভাবে বসবাসকারীদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা আমলে নেয়নি।

অন্যান্য স্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে কি না? এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলম কোনো জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান।

এমএ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়