ঢাকা     মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬৯তম বার্ষিকীতে বক্তারা

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম করেন সাঁওতালরা

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৫, ৩০ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৭:৫৬, ৩০ জুন ২০২৪
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম করেন সাঁওতালরা

‘১৮৫৫ সালের ৩০ জুন ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম করেন সাঁওতালরা। এটি ছিল মূলত কৃষকদের সংগ্রাম। সাঁওতালদের ব্যাপক অংশগ্রহণের কারণে এটি ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’ নামে পরিচিতি পায়। তখন সাঁওতালরা প্রতিরোধ গড়ে না তুললে হয়ত উপমহাদেশে স্বাধীনতার চেতনা উদ্ভূত হতো না।’

সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬৯তম বার্ষিকীতে রোববার (৩০ জুন) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আইইডির এইচকেএস আরেফিন সভাকক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। 

বক্তারা আরও বলেন, আদিবাসীরা পুরনো সাংস্কৃতিক ও নৃতাত্ত্বিক বিষয়গুলো ধরে রেখেছেন। সে কারণে কোথাও কোথাও তারা মূলধারা থেকে আলাদাই রয়ে গেলেন। বিষয়গুলো নিয়ে ভাববার প্রয়োজন আছে। টিকে থাকতে হলে আদিবাসীদের মূল স্রোতে মিশতে হবে। সাঁওতাল বিদ্রোহ থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের আত্মসচেতন হতে হবে।

বক্তারা এ সময় গৌরবময় সাঁওতাল বিদ্রোহের ইতিহাসকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

সভার শুরুতে সাঁওতাল বিদ্রোহসহ সব মুক্তি সংগ্রামের শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বৃহত্তর ঢাকা কমিটির দপ্তর সম্পাদক নিরলা মার্ডি। 

সভাপতির বক্তব্যে নিরলা মার্ডি বলেন, ব্রিটিশরা স্থানীয় ভূস্বামীদের সহায়তায় প্রান্তিক কৃষকদের ভূমি কেড়ে নিতে চেয়েছিল। সাঁওতালদের নেতা দুই ভাই সিধু-কানুর নেতৃত্বে সেবার প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। সেদিন ব্রিটিশদের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছিল কৃষকরা। অত্যাচারের সেই ধারা আজও অব্যাহত। ভূমিদস্যুরা আজও সক্রিয়।

ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভূমি দখলসহ সব প্রবঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বৃহত্তর ঢাকা কমিটির সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিং, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক বিশুরাম মুর্মু, আদিবাসী যুব ফোরামের সাবেক সভাপতি অনন্ত ধামাই, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বৃহত্তর ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিভূতী ভূষণ মাহাতো, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইইডি) সিনিয়র কোঅরডিনেটর জ্যোতি প্রকাশ চট্টোপাধ্যায়, জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব তারিক হোসেন, শান্ত সরেন, নয়ন মাহাতো প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের অংশ হিসেবে ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। সাঁওতাল বিদ্রোহীদের সেদিনের দেশপ্রেমিক সংগ্রাম, আদর্শ ও অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ পরবর্তীকালে ভারতবর্ষের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল। যুগিয়েছিল সাহস ও উদ্দীপনা। মুক্তিকামী মানুষের কাছে আজও তা অনুপ্রেরণার উৎস। প্রতি বছরের ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। 

/এনএইচ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়