রাজধানীর রাজপথ পুলিশশূন্য, ট্রাফিকের দায়িত্বে ছাত্র-জনতা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পাশাপাশি দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ খবর পাওয়ার পরপরই উৎফুল্ল ও উত্তেজিত জনতা আনন্দ উদযাপনের পাশাপাশি নানা স্থানে ভাঙচুর, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এদিন দেশের বিভিন্ন থানা ও স্থাপনায় দুর্বৃত্তদের হামলায় অনেক পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। এর প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। রাজধানীর রাস্তাগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ঘুরে কোনো ট্রাফিক পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। ফলে, ছাত্র ও জনতা নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব। গুলশান, মহাখালী, বিজয় সরণি, শাহবাগ, কাকরাইল, আসাদ গেট, মোহাম্মদপুরসহ বেশকিছু জনবহুল মোড়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ নগরীতে যানবাহনের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। নগরীর বিজয় সরণিতে দেখা গেছে, কয়েক জন ছাত্র ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন লাঠি হাতে নিয়ে। নিয়মিত সময়ের বিরতিতে গাড়ি ছাড়ছেন এসব স্বেচ্ছাসেবী। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দারুণ ভূমিকা পালন করছে ছাত্র-জনতা।
আসাদ গেটে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহেল রানা ও তার বন্ধু সাইমুম হোসেন। তাদের মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বাঁধা। ছোট লাঠি হাতে তারা গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন।
সোহেল রানা রাইজিংবিডিকে বলেছেন, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নেই। আমরা যেহেতু একটা জঞ্জাল দূর করেছি, এই ট্রাফিক ব্যবস্থাও ঠিক করতে পারব।
শিক্ষার্থীদের এমন ভূমিকায় খুশি নগরবাসী। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো স্বপন নামের এক পথচারী বলেন, কী সুন্দরভাবে এই ছেলেগুলো ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছে। দুই মিনিট পর পর ওরা রাস্তার একেক পাশের গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে। কোথাও কোনো ঝামেলা হচ্ছে না, বরং ট্রাফিক পুলিশদের চেয়েও ভালো করছে স্কুল-কলেজের এসব ছেলে।
শাহবাগে কথা হয় ঢাবির ছাত্রী ইয়াসমীন জাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, চাইলেই ট্রাফিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করা যায়। দেখুন, রাস্তায় সবাই কী সুন্দর করে আইন মেনে চলছে। চাইলেই পারে। কিন্তু, কেউ আইন মানতে চায় না। পুরো দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। এটা থেকে বের হতে হবে সবাইকে। সময় লাগলেও সেটা অসম্ভব মনে করি না।
এমএ/রফিক