ঢাকা     রোববার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১

এই স্বাধীনতা রক্ষা করতেই হবে: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৮, ৮ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৫:৫৮, ৮ আগস্ট ২০২৪
এই স্বাধীনতা রক্ষা করতেই হবে: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতা আমাদের রক্ষা করতেই হবে। 

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশে আজকে নতুন বিজয় সৃষ্টি হলো। তরুণ সমাজ এটা সম্ভব করেছে। তারা এ দেশকে নতুনভাবে পুনর্জন্ম দিয়েছে। তাদের প্রতি আমরা সমস্ত কৃতজ্ঞতা জানাই। এ স্বাধীনতা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। 

আরো পড়ুন:

বিভিন্ন জায়গায় হামলা বা আক্রমণ ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কাজ সবাইকে রক্ষা করা। প্রতিটি মানুষ আমাদের ভাই, বোন। তাদের রক্ষা করা এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা আমাদের প্রথম কাজ। 

তিনি বলেন, আমার ওপর যদি ভরসা রাখেন, আশা করি দেশের কোথাও হামলা হবে না। আমার কথা যদি না শোনেন, তাহলে আমার এখানে কোনও প্রয়োজন নেই। আমাকে বিদায় দেন, আমি আমার কাজে ব্যস্ত থাকি। আমাকে প্রয়োজন মনে করলে আপনাদের দেখাতে হবে, আমার কথা আপনারা শোনেন।

সহিংসতাকারীদের প্রতিরোধে আইন নিজের হাতে না তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করলে যেন দুটা টাকা দিয়ে ছেড়ে দিলো, এমনটা যেন না হয়।

এ সময় আবু সাঈদের কোথা বলতে গিতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে। তার কথা প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। তারপর থেকে কোনও যুবক হার মানেনি। তারা এগিয়ে গেছে। 

তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে তিনি বলেন, আজকের তরুণ সমাজকে এটা বোঝানো যে, এই দেশ তোমাদের। এটাকে তোমরা তোমাদের মনের মতো করে গড়ে তুলবে। তোমরা যেহেতু স্বাধীন করতে পেরেছ, তোমরা এটাকে তোমাদের মনের মতো করে গড়ে তুলতেও পারবে। তোমাদের দেখে সারা দুনিয়া শিখবে যে, কীভাবে একটা দেশকে তরুণ সমাজ গ্রহণ করতে পারে এবং পাল্টে ফেলতে পারে।

ড. ইউনূস বলেন, আজকে আমাদের দায়িত্ব হলো, যেটা তারা অর্জন করে নিয়ে এসেছে, সেটা এখন তাদের দিয়ে করিয়ে দেওয়া। সরকার বলতে একটা জিনিস আছে, কিন্তু মানুষের কোনও আস্থা নেই। মানুষ মনে করে, সরকার হচ্ছে একটা দমনপীড়নের যন্ত্র। এটা একটা ভয়ের জিনিস, যাকে সামাল দিয়ে চলতে হবে। এটা সরকার হতে পারে না। সরকারকে দেখে মানুষের বুক ফুলে উঠবে। মনে করতে হবে, সরকার আমাকে রক্ষা করবে, সহযোগিতা করবে, আমার সরকার আমার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু সরকার কারও জন্য পাশে দাঁড়ায় না কোনও সময়।

তিনি বলেন, এখন যে সরকার হবে, সে সরকার মানুষকে রক্ষা করবে, আস্থাভাজন হবে। তোড়জোর করে তাকে ভালো বলাতে হবে না। সে নিজে নিজে বিশ্বাস করবে যে সরকার ভালো, সরকারি লোক দেখলে বলবে যে এ আমার লোক, আমাকে রক্ষা করার লোক। সেই আস্থাটা আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে মানুষের মধ্যে। তাহলে মানুষও যোগ দেবে এর মধ্যে।

এ নোবেলজয়ী বলেন, সারা বাংলাদেশ একটা পরিবার। এই পরিবার আমরা একসঙ্গে চলতে চাই। আমাদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব যা কিছু আছে, সরিয়ে ফেলতে চাই। যারা বিপথে গেছে, তাদের পথে আনতে চাই। যাতে করে একসঙ্গে আমরা কাজ করতে পারি।

উল্লেখ্য, আজ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ফ্রান্সের প্যারিস থেকে তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তিন বাহিনীর প্রধান তাকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া, নাহিদ ইসলাম, উমামা ফাতেমাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধিরাও সেখানে ছিলেন। তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন ইউনূস সেন্টারের কর্মকর্তারাও।

ঢাকা/ইভা/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়