ঢাকা     রোববার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা 

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫০, ১১ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৮:৫১, ১১ আগস্ট ২০২৪
সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য সবার আগে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। রোববার (১১ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সব পক্ষের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করা হবে। এই প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে কিছু সংস্কারের প্রয়োজন হবে। এই সংস্কারের চেষ্টা সরকার করবে। প্রথমত স্থিতিশীলতা আনতে হবে। এরপর একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শত্রুতা দিয়ে কোনকিছুই অর্জন করা যায় না। আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করবো। সব দেশের সাথে সুষম সম্পর্ক রেখে আমরা কাজ করবো। আমরা ভারতের সাথেও ভালো সম্পর্ক রাখবো, চীনের সাথেও। যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সুসম্পর্ক রাখবো।

এই উপদেষ্টা আরও বলেন, বিপুল সংখ্যক জনশক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। আমাদের সব মিশন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে। তবে, এটা মানতে হবে, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। 

‘কিছু কিছু মিশনে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ইউএইতে আমাদের কিছু লোককে জেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই ছাড়া পাবেন। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, উনি নিজেই ওই দেশের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন, যাতে তাদের কোনও সাজা না হয় এবং অতিদ্রুত ছাড়া পায়।’

আমাদের শ্রমিকরা অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের তুলনায় কম বেতন পায়। আমাদের চেষ্টা থাকবে তারা যেন ভালো বেতন পেতে পারেন।

তিনি বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের কিছু ক্ষতি হচ্ছে। এটা মানতেই হবে যে, কিছু সমস্যা হয়েছে। সমস্যা স্বীকার করা হচ্ছে, সমস্যা সমাধানের প্রথম শর্ত। তবে, একজন যোগ্য মানুষকে আমরা উপদেষ্টা হিসেবে পেয়েছি। আশা করছি উনার নেতৃত্বে আমরা আমরা চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কত দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা অনেকের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদকে সহায়তা করবে।

আন্তর্জাতিক মিডিয়াসহ দেশের অনেক গণমাধ্যমেও এসেছে যে, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। আমিও বিষয়টি অস্বীকার করছি না। তবে এটি যথেষ্ট সীমিত আকারে হয়েছে। এগুলো রাজনৈতিকভাবে হয়েছে, রাষ্ট্রের মদদে নয়। এমনকি, আপনারা দেখেছেন ধর্মভিত্তিক দলগুলোও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মাঠে নেমেছে। দল-মত না দেখে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সোমবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন সময় নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের প্রথম কাজ দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। এরপর বলা যাবে আসলে কেমন সময় লাগবে। তারপর এই সরকারের মেয়াদ বলা যাবে। দেশে স্থিতিশীলতা আসুক।

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতকে কোনও বার্তা দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটিও আলোচনার বিষয়। আইন মন্ত্রণালয় যদি চিঠি দেওয়ার কথা বলে, তাহলে আমরা দেব। ভারতের সাথে আমাদের সোনালী সম্পর্ক আছে এবং থাকবে। তবে উভয় দেশের মানুষ কী মনে করে, একটা ভাবনার বিষয়। আমরা মনে করি, এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ভারত আমাদের সহযোগিতা করবে।

নিহতদের পারিবারিক অবস্থা পর্যালোচনা অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা যাওয়ার কথা।

আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় যতটুকু জেনেছি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতির কাছে তার কপি রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজন-সাপেক্ষে আরও বিস্তারিত উপদেষ্টা বৈঠক থেকে জানানো হতে পারে। 

ঢাকা/হাসান/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়