ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের আহ্বান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১১, ১২ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ২২:১১, ১২ আগস্ট ২০২৪
বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের আহ্বান

শিক্ষার্থী-জনতার প্রত্যাশা পূরণে আমূল সংস্কারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক, বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি বিশ্বাস করে, সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাসহ সুশাসিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাহিদা চিরজাগ্রত রাখতে তারুণ্যই নেতৃত্ব দেবে। সেই পথ পরিক্রমায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের উপযুক্ত রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় রাজনৈতিক বন্দোবস্ত অর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

সোমবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘তরুণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে নজিরবিহীন প্রাণহানি ও ত্যাগের বিনিময়ে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের সাক্ষী হয়েছি আমরা। এই অভ্যুত্থানই প্রমাণ করে যে, অদম্য, অপ্রতিরোধ্য তারুণ্যকে উপেক্ষা বা নিপীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা যায় না। সকল রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিতে হবে—তারুণ্যের শক্তিকে দমন নয়, বরং তাদের জন্য মানবাধিকার নিশ্চিতের উপযোগী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যে নতুন দিনের শুভ সূচনা হয়েছে, এর মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার আলোকে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে এ দেশের সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চয়তাসহ একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক সুশাসিত স্বদেশ বিনির্মাণে তরুণরাই আমাদের পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। 

সম্ভাবনাময় যুব জনগোষ্ঠীকে জাতীয় অর্জনের মূল চালিকাশক্তি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৪ উপলক্ষে টিআইবি’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তরুণ প্রজন্মের অংশীজনরা বেশকিছু সুপারিশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন, সাম্য ও মেধাভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক, সুশাসিত, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে যার যার অবস্থান থেকে অঙ্গীকারবদ্ধ ও সক্রিয় উদ্যোগী হওয়া। এমন রাষ্ট্রকাঠামো গড়া, যা দীর্ঘকাল লালিত কলুষিত ও দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির পরাজয়ের শিক্ষা অনুসরণে বাকস্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যমসহ মানবাধিকারভিত্তিক, জনকল্যাণমূলক, অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হয়। রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয়করণ বন্ধ করে পুরো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে এই সংস্থাগুলো কখনোই সরকারের ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থের হাতিয়ারে পরিণত না হয়।

টিআইবির সুপারিশমালায় আরো রয়েছে—বহুমাত্রিক ও বহুপর্যায়ের নজিরবিহীন ও নির্মম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তদন্ত নিশ্চিতে জাতিসংঘের উদ্যোগে সম্পূর্ণ স্বাধীন কমিশন গঠন করার মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। এছাড়াও প্রতিবাদের অধিকার, সমাবেশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিতে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনি কাঠামো নিশ্চিত করা। সরকারি পদ-পদবী ও জনপ্রতিনিধিত্বকে দুর্নীতির লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ-সম্পদ অর্জন ও বিস্তারের পথ চিরতরে রূদ্ধ করা। তথ্য, বাক ও মত প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করার ফ্যাসিস্ট পদ্ধতি চিরতরে বন্ধ করার কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করা। মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসহ আইনের শাসনের সঙ্গে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান তথা সার্বিক রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজাতে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ। সকল ধরনের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে আপামর জনগণ যাতে নির্ভয়ে মতামত ব্যক্ত করতে পারে, তার টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে টিআইবি।

নঈমুদ্দীন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়