ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৯ ১৪৩১

নোবিপ্রবি-সোনাপুর সড়কের বেহাল দশা, চরম ভোগান্তি

এস আহমেদ ফাহিম, নোবিপ্রবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১১, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৬:২১, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নোবিপ্রবি-সোনাপুর সড়কের বেহাল দশা, চরম ভোগান্তি

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(নোবিপ্রবি) পর্যন্ত যাওয়ার একমাত্র রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত একমাত্র সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় ভাঙনসহ বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ নোবিপ্রবি-সোনাপুর সড়কে স্থানীয়সহ নিয়মিত চলাচলকারীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, রাস্তাটি দিয়ে নিজস্ব পরিবহনে যাতায়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ ও পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর এলাকার মানুষ যাতায়াত করেন। ফলে সর্বদাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ছাড়াও আন্তঃজেলা বাস, রিকশা, সিএনজি, ট্রাক, অটোরিকশার চলাচল থাকে সড়কটি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে বেহাল থাকা রাস্তাটি সম্প্রতি বন্যার কারণে চলাচলে একদমই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাজুড়ে অগণিত গর্ত, ফাটল ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে দেখা দিয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের দিকেও রাস্তার অনেক অংশ হেলে গেছে। যখন-তখন ধসে পড়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। রাস্তাটি পর্যাপ্ত প্রশস্ত না হওয়ায় দুটো বাস একসঙ্গে পার হতে গেলে বেশিরভাগ সময়ই ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তারা আরও বলেন, বেহাল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি দ্বিতল বাস রাস্তার পাশের একটি খাদে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে বাসটিতে কোনো শিক্ষার্থী না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বৃহত্তর নোয়াখালীর বিভিন্ন জায়গায় বন্যার্তদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার সময়ও ত্রাণবহনকারী গাড়ি এ রাস্তায় উল্টে যায়।

এ বিষয়ে নোবিপ্রবির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, গত সপ্তাহে আমি এ রাস্তাটি দিয়ে বাংলাবাজারে ত্রাণ দিতে বের হই। যাত্রাপথে কিছু দূর যেতেই আমাদের আমাদের রিকশার ২০ গজ সামনেই একটি ত্রাণবাহী রিকশা রাস্তার খাদে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। প্রায় সময়ই এ রাস্তায় চলাচলের সময় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা ভোগান্তির শিকার হন। রাস্তার চরম অব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সে সঙ্গে, এ রাস্তায় যাতায়াত যন্ত্রণাদায়ক ও ভীতিকরও বটে।

তিনি বলেন, রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালে যথাসময়ে উপস্থিত হতে গিয়ে সমস্যা পড়তে হয়। আমরা স্থানীয় প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাই, নোবিপ্রবি-সোনাপুর সড়কের এ দূরবস্থা নিরসন করেত দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি চার লেনে উন্নীত করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বর্তমানে বন্যার জন্য রাস্তাটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। জরাজীর্ণ সড়কপথে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। নোবিপ্রবির দ্বিতল বাসগুলো দিয়ে এ রাস্তায় যাওয়া মানে মরণ ডেকে আনা। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রাণহানির শঙ্কার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ যানবাহনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোর যন্ত্রাংশ। এক কথায় বলতে গেলে, সোনাপুর জিরো পয়েন্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি যান চলাচলের একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

এ নিয়ে নোবিপ্রবির প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সোনাপুর হতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলীদের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছি আমরা। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে নোয়াখালীর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, রাস্তাটি মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে ১৫ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ বন্যা চলে আসায় ঠিকাদার কাজ করতে পারেননি। এখন পুরোপুরিভাবে কাজ চলবে।

/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়