ক্ষতিগ্রস্ত দুই মেট্রোরেল স্টেশন দ্রুত চালু করতে জাইকা’র সহযোগিতা চান উপদেষ্টা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন (মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া) দ্রুত চালু করাসহ বিভিন্ন খাতে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা চেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা’র প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। এ সময় জাইকার সহযোগিতা চান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।’ তিনি বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে জাইকা’র সমর্থনের প্রশংসা করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। কথিত উন্নয়নের নামে দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের অবসান চায় তারা। বর্তমান সরকার জনগণের এ প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রত্যাশা পূরণে বর্তমান সরকার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্টের (বিইআরসি) বিতর্কিত ৩৪(ক) ধারা বাতিলসহ উন্মুক্ত দরপত্র ব্যবস্থা চালু ও এক্ষেত্রে কাউকে কোনো বিশেষ সুবিধা প্রদান না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

তিনি গ্যাস সঙ্কট থেকে উত্তরণে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্ত দুই স্টেশন দ্রুত চালুসহ সড়ক, সেতু, রেল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রকল্পে জাইকা’র আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা কামনা করেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, জাইকা বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে সব সময় আগ্রহী। 

ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি তিনি সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, জাইকা বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। প্রতিষ্ঠানটি সব সময় প্রকল্পে কাজের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। 

এ সময় তিনি চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করতে সরকারের সহযোগিতা চান এবং নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের ব্যাপারে উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।

বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল বাকী, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।