ঢাকা     শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩১

শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শান্তির জন্য জাতিসংঘের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণে জোরালো অংশগ্রহণসহ শান্তির জন্য জাতিসংঘের সম্মিলিত উদ্যোগে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে ‘শান্তির জন্য নেতৃত্ব: একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের সন্ধানে, জাতিসংঘ সনদের প্রতি ঐক্য’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত আলোচনায় দেওয়া বক্তৃতায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

তৌহিদ হোসেন জাতিসংঘের সনদের নীতি এবং প্রচলিত ও উদীয়মান বৈশ্বিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও কার্যকর নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি নতুন করে প্রতিশ্রুতি হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আসুন আজকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বহুত্ববাদকে নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করি।’

হোসেন জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত মূল্যবোধগুলো পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আন্তর্জাতিক রীতিনীতিকে সম্মান করা কোনো পছন্দ নয় বরং একটি বাধ্যবাধকতা।তিনি জাতিসংঘের সনদের প্রতি ক্রমবর্ধমান অবহেলা এবং যৌথ নিরাপত্তার বৈশ্বিক ব্যবস্থার অবক্ষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য শক্তিশালী জবাবদিহিতা এবং নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই বৈষম্য দূর করতে হবে, জবাবদিহিতা জোরদার করতে হবে এবং কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের কঠোর জবাব নিশ্চিত করতে হবে। প্রচলিত ও উদীয়মান নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদকে আরও প্রতিনিধিত্বমূলক ও কার্যকর করতে জরুরি সংস্কারের আহ্বান জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

শহিদ পরিবারের সদস্যদের পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করবে মন্ত্রণালয় শহিদ পরিবারের সদস্যদের পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করবে মন্ত্রণালয়।

হোসেন মিয়ানমার, গাজা ও ইউক্রেনের মতো দীর্ঘ সংকটে থাকা বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে এবং সশস্ত্র সংঘাতের মূল কারণগুলো নিরসনে কাউন্সিলের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, নৃশংসতার কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ, রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অতিরিক্ত ২০ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করেছে, যা দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের সক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছে।

হোসেন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে মিয়ানমারে রাজনৈতিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কাউন্সিলকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কাউন্সিল আর এই ইস্যুতে উদাসীন থাকতে পারে না, কারণ এতে বেসামরিক জনগণকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয়। তিনি মিয়ানমারের বিষয়ে নিয়মিত ব্রিফিং এবং সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধানে আঞ্চলিক পক্ষ সমূহদের ব্যাপক সম্পৃক্ততার আহ্বান জানান।

হোসেন সময়োপযোগী এই বিতর্ক আয়োজনের জন্য স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান এবং বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের আলোকে শান্তির জন্য নতুন নেতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

তিনি জাতীয় অভিজ্ঞতাকে শান্তির জন্য নেতৃত্বের বৈশ্বিক আলোচনার সঙ্গে যুক্ত করে বলেন, স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটাতে আমাদের জনগণ অসীম সাহস ও দৃঢ় প্রত্যয় দেখিয়েছে এবং আমরা এখন পরিবর্তনের পথে রয়েছি। জটিল ভূ-রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে ছোট দেশ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর কণ্ঠস্বর যেন হারিয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের দায়িত্বের ওপরও জোর দেন হোসেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার সঙ্গে রয়েছেন।

/এসবি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়