ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৮ ১৪৩১

চলচ্চিত্রে তামাকবিরোধী তথ্যচিত্র প্রচারের তাগিদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২৪ অক্টোবর ২০২৪  
চলচ্চিত্রে তামাকবিরোধী তথ্যচিত্র প্রচারের তাগিদ

চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্যের পরিবর্তে শিক্ষণীয় বার্তা পৌঁছাতে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পীসহ সংশ্লিষ্টরা। চলচ্চিত্রের সেন্সর ছাড়পত্রের সময় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) তথ্য ভবনে বিএফসিবি’র সভাকক্ষে মানস (মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা) এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড আয়োজিত ‘চলচ্চিত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড সদস্যদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা জানানো হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল।

চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, চলচ্চিত্রের প্রচার সামগ্রীতে ধূমপানের দৃশ্য যাতে না থাকে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে চলচ্চিত্রের শুরুতে, বিরতিতে এবং শেষে তামাক বা ধূমপানবিরোধী তথ্যচিত্র দেখানোর জন্য নির্মাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে পত্র পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া  হবে। 

ধূমপান ও মাদক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক চলচ্চিত্রে তুলে ধরার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন মো. আবদুল জলিল। চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ধূমপান এবং মাদকের ব্যবহার পরিহার করতে ভ্যালু সিস্টেমে পরিবর্তনের আহ্বান জানান তিনি।

মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার বনিক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক জাকির হোসেন রাজু, প্রযোজক জাহিদ হোসেন, চলচ্চিত্র সম্পাদক ইকবাল এহসানুল কবির, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ, নির্মাতা তাসমিয়া আফরিন মৌ, সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন মানসের সিনিয়র প্রজেক্ট ও কমিউনিকেশন অফিসার মো. আবু রায়হান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের উপ-পরিচালক মো. মঈনউদ্দিন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদোয়ান রনি, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক রফিকুল আনোয়ার রাসেল প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানসের প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত। তিনি বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং সিনেমা-নাটকে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য প্রচার, প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও চলচ্চিত্রের পোস্টার ও ট্রেলারে প্রধান চরিত্র দ্বারা ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। 

মানসের গবেষণার তথ্য তুলে ধরে উম্মে জান্নাত আরো বলেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত কন্টেন্টগুলোতে ধূমপানের দৃশ্য চলছে দেদারছে। 

খসড়া ওটিটি নীতিতে ধূমপান ও তামাক সেবনের দৃশ্য নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলো আমাদের কিশোরদের ধূমপানে প্ররোচিত করছে। নাটক- সিনেমায় সেলিব্রেটিদের হাতে সিগারেট ধরিয়ে উঠতি বয়সীদের ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষকে সুস্থ বিনোদন দিতে হবে। 

মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। এজন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন, যা তামাকমুক্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে। 

সভায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, এইড ফাউন্ডেশন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাটাব, ডাস, আভিয়ান সেন্টার, পাও ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসান/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়