ঢাকা     শনিবার   ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ১০ ১৪৩১

ওয়াশ সেক্টরের ব্লকেজ মোকাবিলায় নতুন প্রকল্প

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১২, ২৬ অক্টোবর ২০২৪  
ওয়াশ সেক্টরের ব্লকেজ মোকাবিলায় নতুন প্রকল্প

জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রেক্ষাপটভিত্তিক ওয়াশ সেক্টরে ব্লকেজ মোকাবিলায় নতুন একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ওয়াটারএইড-এসএনভি কনসোর্টিয়ামের নেতৃত্বে এবং ইউকে সরকারের অধীনে ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত হবে এটি।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে "ওয়াশ সিস্টেম ফর হেলথ’ প্রকল্পের সূচনা কর্মশালা আয়োজন করে উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটার এইড।

প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো-বাংলাদেশে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রেক্ষাপটভিত্তিক ওয়াশ সেক্টরে ব্লকেজ মোকাবিলা। যার মধ্যে রয়েছে সরকারের পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, কমিউনিটির সম্পৃক্ততা, নারী নেতৃত্বকে উৎসাহিত করা, গ্রামাঞ্চলে পানি সরবরাহ ও শহরে স্যানিটেশনের জন্য নমনীয় অবকাঠামো ও পেশাদার পরিষেবা মডেলগুলোর বিকাশ এবং জাতীয় নীতিমালাসমূহকে প্রভাবিত করার জন্য প্রকল্প শিক্ষার ব্যবহার।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ডিপিএইচই) ইঞ্জিনিয়ার তুষার মোহন সাধু খান বলেন, আমাদের অবশ্যই উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। প্রকল্প এলাকার চ্যালেঞ্জগুলো বেশ জটিল এবং আমি আশা করি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ওয়াশ সিস্টেমগুলোর মধ্যকার ব্যবধান ঘোচানোর জন্য একটি সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে পেতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেজন্য আমাদের তৈরিকৃত অবকাঠামোর টেকসইয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া এবং মানুষের মধ্যে আচরণ পরিবর্তনের জন্য কাজ করা জরুরি।

ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ওয়াশ সিস্টেমগুলোকে একে অপরের সাথে একীভূত করতে হবে। সুষমভাবে সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে এবং উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য ক্লিনিক, কমপ্লেক্স এবং হাসপাতাল থেকে নিরাপদ ওয়াশ পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে।

ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকার হেলথ পোর্টফোলিও লিড রশিদ জামান বলেন, আমরা যদিও কোভিড-১৯ এর সময় উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যগত অগ্রগতি অর্জন করেছি, আমাদের অবশ্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং স্বাস্থ্য ও ওয়াশের ফলাফলে স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সাম্প্রতিক অভূতপূর্ব বন্যা সংকট আবারও ওয়াশের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে এবং এইভাবে আমাদের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পারস্পারিক সহযোগিতার অত্যন্ত জরুরি।

স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) অধীনস্থ হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটো বলেন, নিরাপদভাবে পরিচালিত স্যানিটেশন মানে শুধু ভালো টয়লেট নয়; এছাড়া এটি সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও বিষয়। আমাদের অবশ্যই জনগণকে বোঝতে সাহায্য করতে হবে যে ডায়রিয়াজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে এবং স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশ গঠনে স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য নিরাপদ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে ব্যাপক ওয়াশ নীতি বিদ্যমান। তবুও স্থানীয় সরকারগুলো উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। যেমন সম্পদের ঘাটতি, অপর্যাপ্ত ক্ষমতা, নারী নেতৃত্বের অভাব এবং অকার্যকর পরিষেবা সরবরাহের মডেল। মৌলিক পরিষেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, নিরাপদে পরিচালিত ওয়াশের দিকে যাত্রা উদ্বেগজনকভাবে ধীর। শুধুমাত্র ৬১% ক্ষেত্রে নিরাপদ পানির একং ২০% ক্ষেত্রে নিরাপ স্যানিটেশনের সুযোগ রয়েছে।

ওয়াশ সিস্টেম ফর হেলথ’ প্রকল্পের লক্ষ্য হবে– পাইকগাছা এবং লালমনিরহাট, এই  দুটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবাগুলির উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করা এবং যার মাধ্যমে ওয়াশ সম্পর্কিত রোগে  মা ও শিশুদের প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুহার হ্রাস করা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারএইড দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মো. খায়রুল ইসলাম, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকার হেলথ পোর্টফোলিও লিড রশিদ জামান, পলিসি সাপোর্ট ব্রাঞ্চের ডেপুটি সেক্রেটারি সুই মিন জাও, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিল অফিসের মহাপরিচালক (ইনচার্জ) ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) অধীনস্থ হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটো।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পৌরসভা, বেশ কয়েকটি আই/এনজিও, বেসরকারি খাত থেকে আগত ব্যক্তিবর্গ এবং কনসোর্টিয়াম অর্গানাইজেশন, এসএনভি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

/হাসান/সাইফ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়