দুর্নীতি যতটা সম্ভব কমিয়ে সংস্কার করব: উপদেষ্টা
সড়ক পরিবহন, রেল ও বিদ্যুৎ জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবীর খান বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতেই অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। বিশাল ঋণের বোঝা রেখে গেছে এ সরকারের ওপর, যা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা দুর্নীতির যে অবকাঠামো ছিল সেটা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলেছি। আমরা দুর্নীতি যতটা সম্ভব কমিয়ে সংস্কার করব।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) ও চাইনিজ অ্যান্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজনে ‘সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফাওজুল কবীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি কমিয়ে উন্নয়নকে জনগণের প্রয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, এ সরকারের সঙ্গে অন্য সরকারের পার্থক্য হলো; অন্য সরকারের নির্বাচন করতে হয়, টাকা লাগে, মাস্তানি করা লাগে। কিন্তু আমাদের সরকার ক্ষমতায় যায়নি, আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। ছাত্ররা আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। সুতরাং কায়েমি শাসনে দায়বদ্ধ নই। আমরা দায়বদ্ধ হাজারো শহিদের প্রতি। ত্রিশ হাজারের বেশি আহতদের প্রতি।
তিনি বলেন, সরকার আমানত। হাজার কোটি টাকা খরচ করে প্রকল্পে, এটা ব্যক্তিগত টাকা না, জনগণের। এটা মাথায় রাখা উচিত। এ সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা আকাশচুম্বী। সবাই ভাবেন আমাদের কাছে জাদুর কাঠি আছে। আসলে কিছু নেই আমাদের কাছে। ব্যাংকে টাকা নেই। রাজনীতিবিদরা উসখুস করছেন, কবে ক্ষমতায় আসবেন। আমরাও চাই নিজেদের কাজে ফিরে যাই।
ফাওজুল কবীর খান আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম নিয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ। আমরা এখানে একটা কাজ করেছি, দুর্নীতির কাঠামো ভেঙে দিয়েছি। বিইআরসির আগের কাজ ফিরিয়ে দিয়েছি। ঢাকা মেট্রোর সাবেক সচিব হতে হবে বলে যে বিধান ছিল, সেটি বাদ দিয়েছি। যার অভিজ্ঞতা আছে তিনিই এখানে কাজ করতে পারবেন। আবার পাওয়ার গ্রিডে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে আমরা কাঠামোগত পরিবর্তন করতে শুরু করেছি।
কর্ণফুলী টানেলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কোন প্রকল্প দরকার, কোনটা দরকার নেই সেটা জানতে আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। বছরে বিশাল অংকের এলএনজি আমদানি করা হয়। দেশে গ্যাসের সন্ধান না পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে এটা বাড়তে থাকবে। ভোলায় ১০টি কূপ খননের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে গ্যাস পেলে এলএনজি আমদানি কমবে। আমরা উন্নয়নকে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কাজ করছি।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগে অনেক ব্যয় হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রকল্পগুলোয় দেখা গেছে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। আগে ঠিকাদার ঠিক করে, পরে টেন্ডার করা ছিল আগের নীতি। ই-টেন্ডার মানে স্বচ্ছতা হবে, কিন্তু তাতো হয়নি। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প আর না। রেলের প্রকল্পের মেয়াদ বাড়বে না, ব্যয়ও বাড়বে না। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণই আমাদের লক্ষ্য। আমরা দুর্নীতি যতটা সম্ভব কমিয়ে সংস্কার করব। এসব কাজে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চান তিনি।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ