ঢাকা     বুধবার   ২০ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৫ ১৪৩১

উপদেষ্টা পদমর্যাদায় বিশেষ হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ নিয়োগ দিলেন অধ্যাপক ইউনূস

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২০ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৯:৩৯, ২০ নভেম্বর ২০২৪
উপদেষ্টা পদমর্যাদায় বিশেষ হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ নিয়োগ দিলেন অধ্যাপক ইউনূস

ড. খলিলুর রহমান

উপদেষ্টা পদমর্যাদায় ড. খলিলুর রহমানকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকার বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগদান করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি উপদেষ্টার মর্যাদা, বেতন-ভাতাদি ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

খলিলুর রহমান ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) কাডারে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান ও একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি আমেরিকান এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকে নির্বাহী পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮০-৮৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ও আইন ও কূটনীতিতে এমএ এবং অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।  

১৯৮৩-৮৫ সময়কালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালে তাকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মুখপাত্র হিসেবে এ কমিটি ও জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে দায়িত্ব পালন করেন।

খলিলুর রহমান ১৯৯১ সালে জেনেভায় জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনে (আঙ্কটাড) বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘ সচিবালয়ে যোগ দেন। জাতিসংঘে পরবর্তী ২৫ বছরে তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন, যার মধ্যে ছিল জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্বাহী কার্যালয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়নবিষয়ক প্রধান, জাতিসংঘ মহাসচিবের উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি গ্রুপের নির্বাহী সচিব, আঙ্কটাডের প্রযুক্তি বিভাগ, ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক  বাণিজ্য নীতি বিশ্লেষণ গ্রুপের প্রধান, জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আঙ্কটাড ব্যুরো প্রধান, জাতিসংঘ সচিবালয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কর্মসূচির প্রধান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্তঃসংস্থা গ্রুপের চেয়ার এবং বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন ও গতিশীল খাতসমূহের কর্মসূচির প্রধান সমন্বয়কারী।

জাতিসংঘের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকাশনার প্রধান রচয়িতা ও অবদানকারী ছিলেন খলিলুর রহমান। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব এবং আঙ্কটাড মহাসচিবের বাণিজ্য, অর্থনীতি ও উন্নয়ন সম্পর্কিত অনেক বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। ২০০১ সালে ব্রাসেলস স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলনে কর্মসূচি পরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে তিনি নেতৃত্ব দেন, যা এলডিসি দেশের রপ্তানির জন্য শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

২০০১ সালে খলিলুর রহমান তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। তিনি ঢাকায় অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঢাকা/হাসান/ইভা 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়