ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৬ ১৪৩১

মহাখালীতে অটোরিকশাচালকদের সড়ক-রেলপথ অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৪, ২১ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৪:২৩, ২১ নভেম্বর ২০২৪
মহাখালীতে অটোরিকশাচালকদের সড়ক-রেলপথ অবরোধ

মহাখালী রেলগেট এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা (ছবি: রায়হান হোসেন)

ঢাকার মহাখালী রেলগেট এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।ফলে ঢাকা থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। 

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রিকশাচালকরা রেললাইনের ওপর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। তবে বিক্ষুব্ধ রিকশাচালকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে রিকশাচলকরা বিক্ষোভ করছেন। বেশ কিছু দোকানপাটেও তারা ভাঙচুর চালায়। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার জন্য অনেকে শপিং মলে আশ্রয় নেন।  

বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ঢাকা বিভাগ) খায়রুল কবির ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। 

ঘটনাস্থল থেকে জসিম মিয়া নামে এক ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘এক লাখ টাকা ঋণ করে অটোরিকশা কিনছি। এখন যদি চালাতে না দেয় তাহলে কী করে ঋণের টাকা দেবো, আর কীভাবেই বা সংসার চালাবো। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামছি।’’

বিক্ষুব্ধ রিকশাচালকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন


মহাখালী ছাড়াও আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, বসিলা, শেওড়াপাড়া, গাবতলী ও ডেমরা এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। উচ্চ আদালত থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। 

আজ সকাল ৯টা থেকে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে সেসব এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত ১৯ নভেম্বর ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।
প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে


ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।

আদালত বলেন, "ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এটা পুরোপুরি অবৈধ।"

এর পরদিনই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করলেন রিকশাচালকরা। আজও বিক্ষোভ করছেন তারা। 

এদিকে, রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বুধবার (২০ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

সেইসঙ্গে আদালতকে ব্যবহার করে শ্রমিকের জীবিকা ধ্বংস না করা ও শ্রমিকদের প্রতিপক্ষ না বানানোর আহ্বান জানান তিনি।

বিবৃতিতে লিপন বলেন, "ঢাকা মহানগরের সর্বত্র গণপরিবহন না থাকায় প্রধান সড়ক বাদে বাকি এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন রিকশা, ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক। ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব এবং চালকের প্যাডেল চালনার কষ্ট লাঘব হওয়ায় এ পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে।"

বিবৃতিতে বলা হয়, "ঢাকা মহানগরে বর্তমানে প্রায় ৭/৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করে। এই পরিবহন বন্ধ হলে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ এক ধাক্কায় বেকার হয়ে পড়বে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে চালক ও তাদের উপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।"

ঢাকা/রায়হান/ইভা


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়