গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ‘সুখবর’, পাবেন টিসিবির পণ্য
ফাইল ফটো
গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য এলো সুখবর। বাজার পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং তৈরি পোশাক শিল্পে তাদের অবদান বিবেচনায় টিসিবির মাধ্যমে ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারকে দেওয়া হবে ভর্তুকি মূল্যের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি এর ফ্যামিলি কার্ডধারী যে এক কোটি পরিবার রয়েছে, তার বাইরে আরও ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক এই সেবায় যুক্ত হচ্ছেন। এসব পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করবে সরকার। এই কার্যক্রম চালাতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
এর ফলে ফলে টিসিবির পরবর্তী পণ্য বিক্রির কার্যক্রমে ভোক্তা হিসেবে গার্মেন্টস শ্রমিকরাও যুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়, ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ওঠার কথা ছিল।
এর উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “ওটা আমরা অনুমোদন দিয়েছি। টিসিবি ওটা করবে। টিসিবির রেগুলার যে প্রোগ্রাম আছে ১ কোটি পরিবারের জন্য, ওরা বোধ হয় ওখান থেকে সংস্থান করতে পারবে।”
এই ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক কী ১ কোটির বাহিরে থাকবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “১ কোটির ভেতরে আছে। কারণ ১ কোটি সব তো আমরা ইস্যু করতে পারিনি। আমরা বলেছি, আপাতত আপনারা এটা করেন। পরে শুধু গার্মেন্টস না, অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা দেখব। আপাতত আমরা গার্মেন্টসে দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছি, ওদের দেবে।”
কবে নাগাদ গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “টিসিবি যখনি বিক্রি কার্যক্রম শুরু করবে, এটা করব। টিসিবির পরবর্তী বিক্রি কার্যক্রমের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকরা সংযুক্ত থাকবেন। এটা ঢাকার আশপাশের বিশেষ এলাকার জন্য।
এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ দিতে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্য তেল, মসুর ডাল ও চিনি বিক্রি করছেন সরকার। সেই সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৫ কেজি চাল বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে সক্ষম হচ্ছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের ডিওর ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, সাভারসহ ঢাকার কাছাকাছি শিল্পাঞ্চলের গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে টিসিবির নির্ধারিত পণ্য ভর্তুকি মূল্যে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এ জন্য টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি উপকারভোগী পরিবারের অতিরিক্ত হিসেবে আরও ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রির বিষয়টি নীতিগত অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি আলোচনার মাধ্যমে এটির অনুমোদন দিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ১০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে চিনি, ভোজ্য তেল ও মসুর ডাল বিক্রির বাবদ মাসিক সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর প্রতি মাসে খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন চালের প্রয়োজন হবে।
ঢাকা/হাসনাত/রাসেল