দুর্নীতি প্রতিরোধে ১৪ দফা
শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দুদককে ঢেলে সাজাতে হবে: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান
দুর্নীতি প্রতিরোধে ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো-বিচার বিভাগের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে অবিলম্বে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন করা, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী তৈরিতে এর ব্যবস্থাপনা কর্মকাঠামো পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ফাঁকাবুলির সংস্কৃতি পরিহার করে সব ধরনের বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির বিচারহীনতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি।
এ সময় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন না আসবে, ততদিন দুদক বা অন্য দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কাজে আসবে না।’’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম উদ্দেশ্য দুর্নীতিবিরোধী চেতনাকে ধারণ করতে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও আমলাতন্ত্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইফতেখারুজ্জামান।
দলীয়করণ, আমলাতন্ত্র, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অনিয়ম, অনাচারারের কারণে দুদক দুর্বল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘সাঁড়াশি বা শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দুদককে ঢেলে সাজাতে হবে।’’
বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নাই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দুদকের পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামো এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যেন ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে নির্বাচনের মাধ্যমে; তাদের কাছে যেন একটা অবকাঠামো তৈরি হয়, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান অব্যাহত রাখার জন্য।’’
তিনি বলেন, ‘‘সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম ও দুদক সংস্কার। এছাড়া প্রশাসন সংস্কার কাজও চলছে।এবার বিশেষ প্রেক্ষিতে দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত হচ্ছে। সেটি হচ্ছে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন সম্ভাবনার বাংলাদেশ। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’’
মূল প্রবন্ধে টিআইবির উপ-সমন্বয়ক জাফর সাদিক বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়। বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অর্থ লুটপাটের জন্য প্রকল্প পাসের আগে কৃত্রিমভাবে খরচ বৃদ্ধি, বাড়তি অর্থ নানাভাবে সরিয়ে নেওয়া, কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাহীন দরপত্র ও পছন্দের লোককে কাজ দেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটেছে।এমনকি, বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে স্বজনপ্রীতি, বিশেষ করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বেশি প্রাধান্য দেওয়া, ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে অতিমূল্যায়িত চুক্তি, ঘুসগ্রহণ একটি নিয়মিত চর্চায় পরিণত হয়েছিল পতিত সরকারের শাসনামলে।’’
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ