‘আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হবে’
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের মূল দায়িত্ব তিনটি উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, “সেটা হচ্ছে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। মূলত আমাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হচ্ছে বিচার৷ এটা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
আওয়ামী লীগের আমলে কমপক্ষে চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড এবং ধারাবাহিক গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। আমরা যতদিন দায়িত্বে আছি এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
সরকারের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতাড়িত করেছি রাষ্ট্র গঠনের জন্য। কিন্তু যত মানুষকে দেখি সব হচ্ছে দাবি-দাওয়া ভিত্তিক। যে, পদোন্নতি, বেতন বঞ্চিত, খারাপ জায়গায় বদলি করা হয়েছিল। বেতন বাড়াতে হবে, রাজস্ব খাতে নিতে হবে। সমস্ত কিছু হচ্ছে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর দাবি-দাওয়া কেন্দ্রিক। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে কেউ আসে না।”
“মন্ত্রণালয়ের ত্রিশ শতাংশ সময় যায় ব্যক্তিগত দাবি-দাওয়া পূরণে। সবাই এসে বলে বঞ্চিত। আমি যাকে সারাজীবন জানতাম আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, সেও এসে কেঁদে দেয়, বলে আমিও বঞ্চিত। এখন আমি কাজ কী করবো বলেন?”
ঐক্য হচ্ছে সরকারের স্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে কোনোভাবে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হলে, ১৫ বছর কীভাবে ছিলাম সেটা মনেরেখে ঐক্যবদ্ধ থাকেন। ছোটখাটো মতভেদ থাকবে, সেটা যেন অনৈক্য পর্যায়ে না যায়।”
সাইবার সুরক্ষা আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, “এ আইন নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। সাইবার বুলিং কেন রাখলাম? পুলিশকে বিনা পরোয়ানা তদন্তের দায়িত্ব কেন দেওয়া হবে। পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো কম্পিউটার রিলেটেড অপরাধ, দুইটা বক্তব্য সম্পর্কিত সেটার ক্ষেত্রেও বলা আছে এ মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারকের কাছে নথি দেবে।”
সরকারের সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা আগের সরকারের মতো কোনো অন্যায় উদ্দেশ্যে খবরদারি করি না। আমাদের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে কাউকে কিছু বলেন না। আমাদের মধ্যে অসততা পাবেন না। আমরা সম্পদের হিসাব দেব। যেদিন আমার মেয়াদ শেষ হবে সেদিন দুর্নীতি দমন কমিশনসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করলাম তন্ন তন্ন করে তদন্ত করবেন। সাধারণ মানুষও তদন্ত করবেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের চেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের সমালোচনা করবেন। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের যেভাবে সমালোচনা করতেন ওইভাবে কইরেন না। একটু মায়া নিয়ে কইরেন।”
ঢাকা/রায়হান/ইভা