জুলাই স্পিরিট হবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার
‘সাংস্কৃতির আন্দোলন’ আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংস্কৃতিক আন্দোলন কেন জরুরি’ শীর্ষক সেমিনার
‘সাংস্কৃতির আন্দোলন’ আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংস্কৃতিক আন্দোলন কেন জরুরি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
কবি সানাউল্লাহ সাগরের সঞ্চালনায় সেমিনারের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ‘সাংস্কৃতির আন্দোলন’—এর আহ্বায়ক কবি পলিয়ার ওয়াহিদ।
তিনি বলেন, ‘‘সাংস্কৃতির আন্দোলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে; সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন তথা ভারতের ননপলিটিক্যাল শিল্প-সাহিত্যের হেজিমনি থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে মুক্ত করা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শ ও গঠনমূলক সমালোচনার লক্ষ্যে কবি লেখক শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা। কারণ জুলাই স্পিরিটকে জারি রাখতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। বিগত সময়ে ঐক্যের অভাবে ও আওয়ামী জাহেলিয়াতের লেখকদের দালালির কারণেই ভারত বাংলাদেশকে নোংরাভাবে ব্যবহার করতে পেরেছে। ফলে শিল্প সাহিত্যের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাসিস্টের দালালদের অপসারণ করতে হবে।’’
সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করবেন কবি ও গবেষক রাজা আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কবি ও প্রাবন্ধিক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়নের পর হাসিনা সৃষ্ট ফ্যাসিবাদের দালালি সাংস্কৃতিক শেকড় উপড়ে ফেলে বাংলাদেশি সংস্কৃতির নব-অভ্যুদয়ের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ জুলাইয়ের স্পিরিট হবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার। এ জন্য ঐক্যবন্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’’
আলোচক কবি ও কথাসাহিত্যিক আসমা সুলতানা শাপলা শোনান তার ১৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা। শ্বাসরুদ্ধ সেইসব দিনের গল্প। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একাত্তরের গল্প শুনেছি বাবা-দাদাদের কাছে থেকে। কিন্তু জুলাইয়ে সে রকম যুদ্ধ চোখের সামনে ঘটে গেছে। আমাদের যারা গুলি করেছে, আমার সন্তানদের খুন করেছে তারা যদি এখনো দিব্যি বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করে। তাহলে তারা ফের সুযোগে পেলে আমাদের আর বাঁচিয়ে রাখবে না। ফলে রাষ্ট্রকে কঠিন হতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জুলাইয়ের স্পিরিটকে কাজে লাগাতে হবে। অন্যথায় জুলায়ের রক্ত বৃথা যেতে পারে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা সুবিধাবাদী কবি লেখক শিল্পীদের সাবধান করে দিতে চাই।’’ তাদের কর্মকাণ্ডের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
কবি ও ছাত্রনেতা রিদওয়ান নোমানী বলেন, ‘‘খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। গণশত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত বিচার করতে হবে। অন্যথায় মব সংস্কৃতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’’
অনুষ্ঠানে অতিথি আলোচক ছিলেন, লেখক ও অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক শামস আরেফিন ও সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষক নুরুন্নবী শান্ত।
উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জসীমউদ্দিন আপন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কবি শাইখ আল তমাল, শরীফ হাসান, শেখ সাদী ইমু, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ, সাংবাদিক জোবায়ের আহমেদ মুরাদ, জান্নাতুল মাওয়া, আজিম ভূঁইয়া, রাশেদ, মুনতাসিক মুকিত ও নাদিমসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করেন কবি এনামূল হক পলাশ, মুসা আল হাফিজ, নকিব মুকশি, সাজ্জাদ সাঈফ, এহসান হাবীব, মাহফুজা অনন্যা, সাঈদ হাফিজ, মাসুম মুনাওয়ার, বহ্নি কুমুস, রাজিয়া সুলতানা ঈষিতা, মঈন মুনতাসীর, লেখক দিদার মুহাম্মদ, কথা হাসনাত, মঈন মোশাররফ, দীপান্ত রায়হান, মাহদী আনাম, ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম, আবৃত্তিশিল্পী তরিকুল ফাহিম ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহমেদ ইসহাক।
ঢাকা/নাজমুল