ঢাকা     সোমবার   ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২২ ১৪৩১

বিদায়ী বছরে সড়কে প্রতিদিন ২৩ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৫, ৪ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৪:১০, ৪ জানুয়ারি ২০২৫
বিদায়ী বছরে সড়কে প্রতিদিন ২৩ জনের মৃত্যু

শনিবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী

সদ্যবিদায়ী ২০২৪ সালে দেশে প্রতিদিন গড়ে ২৩ জনেরও বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা মোট ৮ হাজার ৫৪৩ জন। এ সময় আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৮ জন।

অন্যদিকে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৬ হাজার ৯৭৪ দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ২৩৭ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ১৯০ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘২০২৪ সালের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

মহাসচিব বলেন, “রেলপথে ৪৯৭ দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত, ৩১৫ জন আহত হয়েছেন। নৌ পথে ১১৮টি দুর্ঘটনায় ১৮২ জন নিহত, ২৬৭ জন আহত এবং ১৫৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এই সময়ে ২ হাজার ৩২৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৫৭০ জন নিহত ও ৩ হাজার ১৫১ জন আহত হয়েছেন।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত ১০ বছরে মোটরসাইকেল ১৫ থেকে ৬০ লাখে উন্নীত হয়েছে, নতুন করে ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় নেমেছে। এসব যানবাহন সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ভয়াবহভাবে বাড়ছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়কে ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ দুর্ঘটনা, নিহত ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আহত ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে।

২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ১৬৮ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ৯৫২ জন চালক, ১ হাজার ৮৭৯ জন পথচারী, ৬২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৭৫৫ জন শিক্ষার্থী, ১২৬ জন শিক্ষক, ১ হাজার ২০৬ জন নারী, ৬৫৮ জন শিশু, ৪৮ জন সাংবাদিক, ১৭ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন চিত্রনায়ক, ৬ জন আইনজীবী, ১২ জন প্রকৌশলী এবং ২১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫০ দশমিক ৮৪ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা, ২৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ বিবিধ কারণে, দশমিক ৩১ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং দশমিক ৭৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, “সরকার বদল হলেও পরিবহনের কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে কেবল। ফিটনেসহীন যানবাহন সড়কে চলছে, আইনের অপপ্রয়োগ চলছে, বিআরটিএ রাজস্ব আদায়ে ব্যস্ত, ট্রাফিক বিভাগ জরিমানা আদায়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, দুর্ঘটনা ঘটার যাবতীয় উপাদান সড়কে বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেবল সভা-সমাবেশে, বক্তব্য-বিবৃতি আর পত্রিকায় বিজ্ঞাপণ দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।”

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সমাজ উন্নয়ন কর্মী আবদুল্লাহ আল-জহির স্বপন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্য মো. জিয়াউল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়