ঢাকা     শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৬ ১৪৩১

শাহবাগ মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ৯ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৫:৪৯, ৯ জানুয়ারি ২০২৫
শাহবাগ মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের

বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টায় ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করা হয়

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুনঃতদন্ত এবং এ মামলায় কারাগারে থাকা সব বন্দির মুক্তির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টায় ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করা হয়। আন্দোলনকারীদের অনেককে রাস্তায় বসে ও শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ সময় সেখানে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় কারাগারে থাকা সব বন্দির মুক্তি দিতে হবে। তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও পুনর্বাসন করতে হবে এবং এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের ‘ঙ’ অনুচ্ছেদ বাতিল করতে হবে।

আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে আসার সময় শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। তবে, তারা ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে চলে আসেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি করেন আন্দোলনকারীরা। তারা জানিয়েছেন, শহীদ মিনারে অবস্থান করা তাদের মূল কর্মসূচি। 

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য মো. রমিজ উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, “২০০৯ সালে তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার নীলনকশার অংশ হিসেবেই পরীক্ষিত সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। একইসঙ্গে পরিকল্পিতভাবে বিডিআর সদস্যদের ফাঁসানো হয়। বিডিআর সদস্যদের বিরুদ্ধে করা বিস্ফোরক মামলায় সবার জামিন দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ব না।”

সাবেক বিডিআর হাবিলদার আব্দুল আখের বলেন, “পিলখানা হত্যাকাণ্ডে দণ্ডিত বিডিআর সদস্যদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা বাতিল, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও পুনর্বাসন এবং পিলখানা হত্যা মামলা পুনঃতদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা না হলে আমরা শাহবাগ ছাড়ব না। আমরা দেশপ্রেমিক সৈনিক। আমাদেরকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।”

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে, হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

ঢাকা/সুকান্ত/রায়হান/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়