ঢাকা     শনিবার   ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  ফাল্গুন ৩ ১৪৩১

সংস্কারের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল পরিবর্তনের সুপারিশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫  
সংস্কারের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল পরিবর্তনের সুপারিশ

সংস্কারের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল পরিবর্তনের সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। দুর্যোগের ঝুঁকি ও দুর্যোগকালে ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশল পরিবর্তন আনতে হবে। এ-সংক্রান্ত তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। 

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলা: মানবিক সহায়তা-ব্যবস্থা সংস্কারের অগ্রাধিকার’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। ইনসাইটস (ইনস্টিটিউট অব ইনোভেশন ফর জেন্ডার অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান ট্রান্সফরমেশন) এবং নাহাব (ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাক্টরস বাংলাদেশ) এ সংলাপের আয়োজন করে।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন নাহাবের সভাপতি মো. রফিকুল আলম। ইনসাইটস ও নাহাবের উপদেষ্টা মো. এহসানুর রহমানের সঞ্চালনায় মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ইনসাইটসের উপদেষ্টা সুমন আহসানুল ইসলাম। 

সুমন আহসানুল ইসলাম বলেন, “দেশে অপেশাদার কর্মকর্তারাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষায়িত কাজ। যারা এ বিষয় বোঝেন, তাদেরই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় থাকা উচিত।” 

সভাপতির বক্তব্যে রফিকুল আলম বলেন, “মানবিক সহায়তার চাহিদা পূরণের সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে নানা টানাপোড়েন ও প্রাতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী নতুন সরকারের প্রেক্ষাপটে সংস্কারের অগ্রাধিকার পূরণে সমষ্টিগত পদ্ধতির প্রতি আগ্রহ ও গতিশীলতা একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলো পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করলেও এই পরিবর্তনকালীন সময়টি জটিল। তাই, অংশীজনরা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে এবং সরকারের অভ্যন্তরে স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করছে।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে দুর্যোগবিষয়ক গবেষক আব্দুল লতিফ খান বলেন, “আমরা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পাশাপাশি রাজনৈতিক জটিলতার মধ্যে আছি। দুর্যোগ মোকাবিলা মানেই ত্রাণের বিষয়টি গুরুত্ব বুঝি। কিন্তু, দুর্যোগ ব্যবস্থা একটি বৃহৎ বিষয়। আবার ত্রাণ তহবিল ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব আছে। আমরা ৫ বছর আগেই এ-সংক্রান্ত জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের কথা বলেছি। কিন্তু, সেটা হয়নি। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতা বাড়লেও তা ঝুঁকি বৃদ্ধির তুলনায় খুবই কম।”

মো. এহসানুর রহমান বলেন, “দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশলের যে বিষয়গুলোতে আমাদের পরিবর্তন আনা দরকার, সে জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে গবেষণা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গবেষকদের সঙ্গে বাস্তবায়নকারীদের দূরত্ব কমানোর জন্য এ গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় মানবিক সহায়তা-ব্যবস্থা সংস্কারের মাধ্যমে মানবিক সংস্থা ও সরকার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবর্তিত কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে সংকটপীড়িত সমাজের সুরক্ষা ও সহায়তা নিশ্চিত করার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সুপারিশ উঠে এসেছে।” গবেষণার ফলাফল কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

মেহেদি হাসান শিশির বলেন, “আমরা শুধু আইন দেখি, নিজেদের দায়িত্ব দেখি না। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সবকিছু নিরাপদ আছে কি না, তা দেখি না। এতে আমি নিজের ক্ষতি করছি, অন্যের ক্ষতি করছি। সচেতনতার সঙ্গে দৃশ্যমান শাস্তি দরকার, যেখানে মানুষ সচেতন হবে এবং আইন মানতে বাধ্য হবে।“ শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্যোগ সংক্রান্ত কারিকুলামগুলো পর্যালোচনার আহ্বান জানান তিনি।

সংলাপে আরো বক্তৃতা করেন অ্যাকশনএইডের উম্মুল খায়ের তিথি, ইনসাইটসের নিগার রহমান, সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌসি, শিক্ষার্থী হাবিবা আক্তার প্রমুখ।

ঢাকা/এএএম/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়