ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৫ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১২ ১৪৩১

জাতিসংঘের প্রতিবেদন

আন্দোলনকারী নারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালায় আওয়ামী লীগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ০০:৫০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আন্দোলনকারী নারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালায় আওয়ামী লীগ

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নারীরা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারী আন্দোলনকারীদের ওপর আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের যৌন নিপীড়নের ভয়ংকর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা নারীদের শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণের হুমকি ও যৌন হয়রানি করেছেন বলে এই প্রতিবেদনের বর্ণনায় লেখা হয়েছে। 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন-সংক্রান্ত ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার পরতে পরতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র কর্মীদের সংগঠিত করতে থাকে। আন্দোলন দমনের প্রাথমিক ধাপে আওয়ামী লীগ নেতাদের উসকানিতে লাঠিসোঁটা, ধারালো অস্ত্র এবং কিছু ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগ কর্মীরা।

আরো পড়ুন:

নারীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে তাদের ওপর যৌন নিপীড়ন করা হয় ও অপদস্থ করার চেষ্টা করা হয়, লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে বলা হয়েছে, নির্যাতনের শিকার কয়েকজন নারীকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়। কয়েকজন নারী আন্দোলনকারী নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের শিকার হন।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শিশুদেরও লক্ষ্যবস্তু করা হয়। আন্দোলন চলাকালে শিশুদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার, অমানবিক পরিবেশে আটক, নির্যাতন ও ইচ্ছাকৃত অঙ্গহানি ঘটিয়েছে পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী।

নারীদের ওপর শারীরিক আক্রমণের পাশাপাশি যৌন নিপীড়নও হয়েছে নিয়মিত। নারী আন্দোলনকারীদের বারবার অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। নারীদের ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের হুমকি দিয়েছে হামলাকারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ সদস্যরা।

প্রতিবেদনে একটি ঘটনার বর্ণনায় লেখা হয়েছে- আগস্টের শুরুতে ঢাকায় একদল পুরুষ বাঁশের লাঠি হাতে এক নারীকে আটকায় এবং জানতে চায় তিনি আন্দোলনকারী কি না। ওই নারীর ফোন ও ব্যাগ তল্লাশি শেষে তারা বাংলাদেশের পতাকা খুঁজে পায়। পরে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে—তার চুল ধরে টান দেয়, জামা ছিঁড়ে ফেলে এবং যৌন হয়রানি করে। পাশাপাশি তার গায়ে নখ দিয়ে আঁচড় কাটে এবং যৌন নিপীড়নমূলক গালাগাল করে যায়।

জুলাইয়ে ঢাকায় আরেক নারী আন্দোলনকারীর ওপর ছাত্রলীগের হামলার বর্ণনাও উঠে এসেছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। ওই নারী, তার মা এবং পরিবারের সব নারী সদস্যদের ধর্ষণের হুমকি দেয় দুই ছাত্রলীগ কর্মী। এরপর অশ্লীল মন্তব্য করে এবং যৌন হয়রানি করে। এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী ফোনে ধর্ষণের আরো হুমকি পান।

কুমিল্লায় ছাত্রলীগ কর্মীরা বেশ কয়েকজন নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, যার মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা ওই দুই শিক্ষার্থীকে আটকায়, যৌন হয়রানি করে এবং এরপর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ/রাসেল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়