মেট্রোরেলে চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন দাবি

ফাইল ছবি
কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এক যুগেরও বেশি সময় হলেও মেট্রোরেল বা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন হয়নি। এতে ডিএমটিসিএলের সরাসরি উন্মুক্ত নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সমস্যা সমাধানে জনপ্রিয় এই যোগাযোগ মাধ্যমের চাকরি বিধিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আগামী তিন দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংস্থাটির উন্মুক্ত নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকার যানজট নিরসনকল্পে ঢাকায় বসবাসরত জনগণের জন্য বহুল আকাঙ্ক্ষিত একটি পরিবহন হচ্ছে ঢাকা মেট্রোরেল। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ চালু হয়। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে ভ্রমণ করছেন।
যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা ও সুষ্ঠু ট্রেন পরিচালনার জন্য রাতদিন ২৪ ঘণ্টা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।২০১৩ সালের ৩ জুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এক যুগ পেরিয়ে গেলেও, অদ্যাবধি চাকরি বিধিমালা প্রণীত না হওয়ায় উক্ত প্রতিষ্ঠানে সরাসরি উন্মুক্ত নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বছরের পর বছর চরম বৈষম্য, স্বেচ্ছাচারিতা, অন্যায় ও জুলুমের শিকার হচ্ছেন এবং সেই সাথে পূর্ণাঙ্গ প্রাতিষ্ঠানিক বিধি বিধান না থাকায় যাত্রীসেবার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী স্মারক নম্বর-২৮.০০.০০০০.০০০.৬০.০০১.২৪.১২২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর (খ) অনুসারে স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। উক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী ডিএমটিসিএল এর ৬০তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত ৭.৬, ৮.৩ ও ৯.৩ অনুযায়ী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে ডিএমটিসিএল এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে প্রেরণ করার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রায় ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো প্রণয়ন করা হয়নি। স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা না থাকায় ডিএমটিসিএল এর ২০০ জনেরও বেশি দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ হুমকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আরো উল্লেখ্য, ইতঃপূর্বে অসংখ্যবার লিখিত ও মৌখিকভাবে একটি বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্য চাকরি বিধিমালা (অন্যান্য সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির সাথে সমন্বয় রেখে) প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসলেও, বহুবার আশ্বাস প্রদান করা সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত কোনো এক অজানা কারণে ডিএমটিসিএল চাকরি বিধিমালা এখন পর্যন্ত প্রণয়ন করা হয়নি।'
এমতাবস্থায়, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিএমটিসিএল এর স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন করা না হলে ১৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে যেকোন সময় আমরা কঠোর কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো। এতে করে মেট্রোরেলের সেবা থেকে সম্মানিত যাত্রীসাধারণ বঞ্চিত হলে ডিএমটিসিএল এর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।
ঢাকা/হাসান/এসবি