প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম ৯ টাকা করার দাবি তরুণ চিকিৎসকদের

শিশু-কিশোর ও তরুণদের নাগালের বাইরে নিতে প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম সর্বনিম্ন ৯ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তরুণ চিকিৎসকরা।
দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত তরুণ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হলে ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় হবে।
শনিবার (১৫ মার্চ) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে তামাকপণ্যের ব্যবহার হ্রাসকরণে তরুণ চিকিৎসকদের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন তারা।
কর্মশালায় হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিত্যপণ্যের তুলনায় বাংলাদেশে তামাকপণ্য সস্তা। ফলে, শিশু-কিশোর ও তরুণরা সহজেই এ ক্ষতিকর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন। তাই, তাদের নাগালের বাইরে নিতে তামাকপণ্যের ওপর বেশি কর আরোপ ও মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
কর্মশালায় আরো বলা হয়, বর্তমানে সিগারেটের চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই, আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্র করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলে শিশু-কিশোর ও তরুণরা ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে প্রতি শলাকা বিড়ির সর্বনিম্ন দাম ১ টাকা করার দাবি জানানো হয়। এটি বাস্তবায়ন করা হলে, ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মোতালিব শান্ত বলেন, “চিকিৎসক হিসেবে আমাদের তামাকের ক্ষতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তামাকপণ্যের ক্ষতি সম্পর্কে জোরালো প্রচার চালাতে হবে।”
শিশু-কিশোর ও তরুণদের হাতের নাগালের বাইরে নিতে তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান তিনি।
কর্মশালায় তরুণ চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার কমাতে চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে রোগীদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার কমাতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং তামাক পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর ও মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপদেষ্টা ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরামর্শক নাইমুল আজম খান, সমন্বয়ক ডা. অরুনা সরকার ও কমিউনিকেশন অফিসার আবু জাফরসহ অন্যরা।
ঢাকা/হাসান/রফিক