৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংক চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আগামী ৯ এপ্রিল বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে উচ্চগতি ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবার নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আজ ২৫ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংক এর স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন। পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে স্টারলিংক তার বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সেবাদানকালে, এনজিএসও নীতিমালা মেনে কোম্পানিটি স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা আইআইজি ব্যবহার করবে।
এদিকে, আনুষ্ঠানিক পরীক্ষার আগে ঢাকার এক হোটেলে গতকাল সোমবার স্টারলিংক ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা এই পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, ডাউনলোড গতি ২৩০ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ২০ এমবিপিএস। এই পরীক্ষায় ইন্টারনেটের ল্যাটেন্সি ছিল ৫০-৫৩এমএস (মিলিসেকেন্ড)৷ গতি পরীক্ষার সময় স্টারলিংকের সার্ভার ছিল সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে এবং ক্লায়েন্ট লোকেশন দেখানো হয়েছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর।
স্পেসএক্সের মালিকানাধীন স্টারলিংক মূলত লো-আর্থ অরবিট (এলইও) স্যাটেলাইট ব্যবহার করে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে। এটি বিশেষ করে দুর্গম ও গ্রামীণ অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে এখনও অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় ফাইবার অপটিক বা ব্রডব্যান্ড সংযোগ পৌঁছায়নি সেখানে স্টারলিংক একটি সম্ভাবনাময় সমাধান হয়ে উঠতে পারে।
এর আগে, গত ২৩ মার্চ ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। আর ৯০ দিন পর এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে।”
তিনি বলেন, “৭ এপ্রিল থেকে ঢাকায় চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হবে। তবে সেই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ৯ এপ্রিল। ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। সেদিনই স্টারলিংকের ব্যবহার শুরু হবে।”
“এই ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করে ৯ তারিখ থেকে সম্মেলনের সবগুলো ইভেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার হবে। সম্মেলনে ৫০টিরও বেশি দেশ থেকে ৫৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার প্রতিনিধি থাকবেন।”
তিনি আরো বলেন, “বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ সরেজমিনে তুলে ধরার মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানো এই আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য।”
এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্কের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক চালু করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে তিনি একটি চিঠিতে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের জন্যও আমন্ত্রণ জানান।
ঢাকা/হাসান/ইভা