সাধ না মিটিল, আশা না পুরিল
নাসরীন মুস্তাফা || রাইজিংবিডি.কম
১৫ আগস্ট ১৯৭৫। ফজরের আজানের মধুর ধ্বণি ছড়িয়ে পড়ছে চার দিকে। সুবহে সাদিকের পবিত্র সময়ে ঢাকার রাস্তায় নেমে এসেছিল সেনা-ট্যাঙ্ক। এর ভেতরে গোলা-বারুদ আছে কি নেই, জানার প্রয়োজন কি? ভয় ছড়িয়ে দিতে এগুলোর কুৎসিত অবয়ব যথেষ্ট। ভয়ের চাদর আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ে সেনাদের উদ্যত অস্ত্রের প্রদর্শনীতে। বুট জুতার ভারি আওয়াজসমেত মারণঘাতী অস্ত্র নিয়ে যে বাড়িতে ঢুকে পড়ে বেঈমান সেনাদল, সে বাড়ি রেণুর বাড়ি। বাংলার গৃহবধূ স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখি গৃহকোণ গড়ে তোলে। রেণুও গড়েছিল।
ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরের বাড়িটা রেণু মানে বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের নিজের হাতে বানানো ছিল। প্রথমে এক তলা। এরপর দুই, এরপর তিন তলা। মনের মতো করে রান্নাঘর বানিয়ে এর পাশে রাখা ছিল কবুতরের ঘরগুলো। সকাল হতে না হতেই কবুতরের ঝাঁক সুর তোলে-বাক্ বাকুম! বাকুম বাক্!
বাগানে ফুলের ঝাড়। সবুজ ঘাসে পা ছুঁয়ে দোলা যায়, এমন এক দোলনাও আছে বাগানে। রেণুর দুই মেয়েকে দুলিয়ে দিত দোলনা, সঙ্গে দুলে উঠত গল্পের ঝুড়ি। বোনের সঙ্গে বোনের গল্প ঝুড়িভরাই তো হয়। পাশেই রাখা ছোট্ট সাইকেল। রেণুর ছোট ছেলেটা সাইকেল চালায়, ছড়া কাটে, শ্লোগানও দেয়। প্রতিবাদের ধাপ এক এক পেরুনো বাঙালির মিছিল থেকে আকাশ ছোঁয়া শ্লোগান শুনে সাইকেল চালাতে চালাতে কতবার মিষ্টি রিনরিনে কণ্ঠে আওয়াজ উঠেছে- তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ মুজিব শেখ মুজিব!
রেণুর সকল সাধ, সকল আশা সংসার ছাপিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাধ আর আশাতে মিশে যায় এই বাড়িতে। বাঙালির সকল প্রতিরোধের উৎসভূমি হয়ে ওঠা সেই বাড়ির দোতলার ঘর থেকে ঘুম ভেঙে উঠে আসা শেখ মুজিব, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আক্রমণের আঁচ টের পেয়ে নেমে এসেছিলেন নিচে। টেলিফোনে আদেশ করেছেন আক্রমণ ঠেকানোর জন্য সৈন্য পাঠাতে। কাপুরুষতার চূড়ান্ত উদাহরণ তৈরি হচ্ছে টেলিফোনের ওপাশে, এপাশে প্রতিরোধ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আর রেনুর প্রথম পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল।
পুত্র হারানোর শোক বুকে নিয়ে আবার দোতলায় উঠে যাওয়া বঙ্গবন্ধু দেখেন, সিঁড়ির মাঝামাঝি উঠে এসেছে বেঈমান খুনীরা। ধমকে ওঠেন বাংলার বাঘ। পায়ের তলার মাটি কেঁপে উঠতেই মাতাল খুনীর হাতের অস্ত্র ঝাঁঝরা করে ফেলে বাংলাদেশের বুক। সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়েন বীর। মৃত্যু যন্ত্রণা এক ফোঁটা আর্তনাদেরও করুণ রূপ নিতে পারেনি। সারা জীবন সম্মানের সঙ্গে মানুষের জন্য লড়াই করা বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, প্রিয় নেতার পবিত্র আত্মা মিশে যায় বাংলার বাতাসে। মুখ উঁচু করে রাখা তাঁর দীর্ঘ শরীরের সব সৌন্দর্য স্থির হয়ে যায় মাতৃভূমির দুর্দশাকে জাগিয়ে দিয়ে।
আর ঠিক সেই সময় দোতলায় দাঁড়ানো হার্মাদরা ঘিরে ধরে রেণুকে। রেণুর তীব্র গর্জন ছিল এরকম- আমি কোথাও যাব না। উনাকে যখন মেরে ফেলেছ, আমাকেও মেরে ফেলো।
রেণু কোথাও যাননি। যেতে পারেন না। প্রিয়তম স্বামী, খেলার সাথি মুজিবের পাশে থাকার সাধ আর আশা যার আজীবনের, জীবনের সাধ্য কি তাকে মুজিবের থেকে আলাদা করে! গুলির মুহূর্মুহু আওয়াজে লুটিয়ে পড়া রেণুর কোমল সুন্দর পবিত্র শরীর জড়িয়ে রাখা শাড়ি রক্তাক্ত হয়, চুড়িসহ হাত মাটিতে পড়ে আরেকবার জানিয়ে দেয়, বাংলার বধূ, বাংলার মা এমনি হন। কেবলমাত্র স্বামী-সন্তানকে নিয়ে হাসি আনন্দে ভরপুর সংসার পাওয়ার সাধ আর আশা নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর বাংলাদেশের সমৃদ্ধির সাধ আর আশা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা হিসেবে গড়ে তোলার নেপথ্য কারিগর হিসেবে তিনি যে উদাহরণ সৃষ্টি করে গেলেন, তার খোঁজ হাজার বছরেও মিলবে কি?
রেণু থেকে বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে হয়ে উঠলেন বাংলার মা, বঙ্গমাতা। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তারিখে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। বাবা শেখ জহুরুল হক ও মা হোসনেয়ারা বেগমের দুই মেয়ের ছোট রেণু। ফর্সা, গোলগাল সুন্দর শিশুটির চোখের মণি কালো নয়, কিছুটা রঙিমাভ। সংসারে কোনো অভাব ছিল না। হেসে খেলে বড় হয়ে উঠবে রেণু নামের হলদে পাখির ছানার মতো, ফুলের পরাগের মতো সেই শিশুটি, এটাই তো স্বাভাবিক ছিল। সেভাবে কিন্তু হয়নি। মাত্র তিন বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন, পাঁচ বছর বয়সে মা’কে, সাত বছর বয়সে হারান দাদাকে। একমাত্র পুত্র হারিয়ে দাদা শেখ আবুল কাশেম সব সম্পত্তি দুই বোনকে লিখে দিলেন, দুই বোনের বিয়ে দিলেন আত্মীয়ের ভেতর। রেণুর বিয়ে হলো খোকার সঙ্গে। খোকা শেখ লুৎফর রহমান আর শেখ সায়েরা খাতুনের বড় ছেলে। ভালো নাম শেখ মুজিবুর রহমান। শৈশব থেকেই মানুষের বিপদে-আপদে ছুটে যাওয়া খোকা সবার কাছে মুজিব, সকলের মুজিব।
সব হারিয়ে শাশুড়ির কাছে বড় হতে থাকা রেণু শাশুড়িকেই ‘বাবা’ ডাকতেন। কিশোরী বয়সে এসে ফুলশয্যা হয়, ততদিন খোকা ও খোকার ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলতেন। যখন বুঝতে শিখলেন বিয়ের মর্মার্থ, চিনলেন স্বামীকে, ততদিনে মুজিব হয়ে উঠেছেন ব্যস্ত নেতা। গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে এসেছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা ফজলুল হক এবং সারা ভারতে বড় নেতা হিসেবে খ্যাতিমান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। মুজিব তাদের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্রদের দাবি পেশ করে এই দুই নেতার নজর কেড়েছেন। সোহরাওয়ার্দী মুজিবকে বলেছিলেন, কলকাতায় গেলে যোগাযোগ করতে।
স্কুল জীবনেই প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা মুজিব কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে পড়তে যাওয়ার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে শুরু করেছিলেন ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলন, চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা। দিন-রাত মানুষের জন্য কাজ করছেন, ব্রিটিশদের কূটকৌশলে সৃষ্ট হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বাড়ি যাওয়ার ফুরসত মেলে না। ওদিকে টুঙ্গিপাড়া গ্রামে রেণু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, একটি ছেলে হয়েছিল, বাঁচেনি। এরপরও স্বামীকে লেখা চিঠিতে রেণুর ভাষ্য ছিল এরকম: ‘আপনি শুধু আমার স্বামী হওয়ার জন্য জন্ম নেননি, দেশের কাজ করার জন্যও জন্ম নিয়েছেন। দেশের কাজই আপনার সবচাইতে বড় কাজ। আপনি নিশ্চিন্ত মনে সেই কাজে যান। আমার জন্য চিন্তা করবেন না। আল্লাহর উপর আমার ভার ছেড়ে দিন।’
তরুণ মুজিব সৃষ্টিকর্তার কতটা আশীর্বাদ পেয়েছিলেন, তার প্রমাণ তাঁর রেণু। কিন্তু ব্রিটিশ হটিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া বাঙালিদের কপালে সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ হয়ে আসেনি পাকিস্তান নামের নতুন দেশ, যে দেশে কিছুতেই কমলো না রেণুর স্বামী মুজিবের কষ্ট। রেণু একলা একা সংসার সামলান। সন্তানদের জন্মের সময়ও স্বামীকে কাছে পান না। এ নিয়ে তাঁর আক্ষেপ নেই। কেবল ভাবনা হয় তখন, যখন পাকিস্তান সরকারের রুদ্ররোষে মুজিবকে বারবার কারাগারে যেতে হয় এবং তিনি কখনো কখনো অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসারের সাধ পূর্ণ করার সুযোগ মেলে সেই প্রথমবার, যখন চুয়ান্ন সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে স্বামীকে সাহায্য করার জন্য ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঢাকায় এলেন রেনু। ছেলেমেয়েরা বাবাকে পাবে। রেণুর বড় সাধ, নিজের হাতে স্বামীর যত্ন করবেন। অল্প সময়েই এই সাধ দুঃসাধ্যে পরিণত হয়। বারবার গ্রেপ্তার হন শেখ মুজিবুর রহমান। বারবার লন্ডভন্ড হয় রেনুর সাজানো সংসার। ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে পড়েন। বাড়ি ভাড়া দিতে চায় না কেউ। ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি করতেও কী যে কষ্ট!
দূরদর্শী রেনু তখন সিদ্ধান্ত নেন, নিজের একটি বাড়ি বানাবেন ঢাকাতে। খুব চেষ্টা করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে বাড়ির কাজ শুরু করলেন। এ বাড়িতেই জন্ম হয় সবচেয়ে ছোট সন্তান শেখ রাসেলের। যদিও রাসেল শিখে নিয়েছিল, বাবাকে দেখতে ‘বাবার বাড়ি’তে যেতে হয়। বাবার সেই বাড়ি থেকে বাবা ইচ্ছে করলেই চলে আসতে পারেন না। একা একা সেখানে তাঁকে কাটাতে হয় দুঃসহ দিন-রাত্রি। ‘মায়ের বাড়ি’তে সব কিছু একা হাতে সামলান মা। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, গৃহশিক্ষক রাখা, বাজার-সদাই, রান্নাটাও নিজ হাতে করেন। গ্রামে কার কি সাহায্য করতে হবে, দলের কোন্ নেতার কি সমস্যা, সব তিনি দেখছেন, ক্লান্তিহীন। এর মধ্যে গান শুনছেন, বই পড়ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া দেখছেন, কামাল সেতার শিখছে, হাসিনা ছবি আঁকছে, রেহানা নাচ শিখছে। ফাঁকি দেওয়ার জো নেই।
ড. নীলিমা ইব্রাহিম তাঁর লেখা বই ‘বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব’-এ তাঁর সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লিখেছেন, রেণু তাঁকে বলেছেন, ‘আপা, আমি চুবনী খাইয়া খাইয়া সাঁতার শিখছি। বাচ্চাদের এতটুকু বিলাসিতা শিখাই নাই।’ আপাদমস্তক গৃহবধূ, মা এই রেণুই আবার জেলখানায় দেখা করতে গিয়ে স্বামীকে বলেছেন, ‘বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবনের কাহিনী।’
বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্য আমরা পেয়েছি লেখক শেখ মুজিবুর রহমানকে। পেয়েছি নির্ভীক রাজনীতিবিদ বঙ্গবন্ধুকে। জেলের বাইরের সব খবর জানাতেন স্বামীকে। দলের জন্য নেতা যে নির্দেশনা দিতেন, তা শুনে আসতেন। সংসারের কোনো কিছু নিয়ে তাঁকে ভাবতে হয়নি। তেমনিভাবে রাজনীতির নানা কঠিন সময়েও সত্যিকারের কমরেডের মতো সঠিক পরামর্শ পেয়েছেন স্ত্রীর কাছ থেকে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নেওয়ার বিষয়ে নেতাদের সমর্থনকে হটিয়ে দিয়ে তিনি দৃঢ় কণ্ঠে এর বিরোধীতা করেছেন। জনরোষ সামলাতে না পেরে ছয় দফার দাবিতে অটল থাকা বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় সরকার, আর তখনি আসলে নির্ধারিত হয়ে যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সম্ভাবনা। কেননা, এর ধারাবাহিকতায় সত্তরের নির্বাচন, ছয় দফার সমর্থনে নিরঙ্কুশ বিজয়লাভ এবং পাকিস্তানের শাসকদের ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা উন্মাতাল করে তোলে বাঙালির স্বাধীনতার দাবি। একাত্তরের ৭ মার্চ তারিখে ভাষণে বঙ্গবন্ধু কী বলবেন, এ নিয়ে হাজারো চাপ, নানা জল্পনা-কল্পনার মুখে অটল থাকার কথা জানিয়ে বঙ্গমাতা বলেছিলেন, কারো কথা শুনতে হবে না, বঙ্গবন্ধু যেন বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথাগুলোই স্পষ্ট করে বলেন। বঙ্গবন্ধু ঠিক তা-ই করেছিলেন। ভাষণের সময় সামনের টেবিলের উপর ছিল না কোনো কাগজ। চোখের কালো ফ্রেমের চশমাটা টেবিলের উপর রেখে বঙ্গবন্ধু উজাড় করে দিয়েছিলেন তাঁর স্বপ্নের কথামালা। সেই স্বপ্নই অবশেষে ধরা দিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের সবাইকে নিয়ে বন্দী রেণুকে ছাড়তে হয়েছিল নিজের বাড়ি। স্বাধীন দেশে তিনি ফিরে পেলেন প্রিয়তম স্বামীকে, প্রিয় গৃহকোণ। বড় সাধ, স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করবেন। বড় আশা, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার কাজে স্বামীর পাশে থাকবেন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগী, লাঞ্ছিত মা-বোনকে সহযোগিতা করতেন, তাদের চিকিসার ব্যবস্থা করাসহ সব রকমভাবে তাদের পাশে দাঁড়ালেন। সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার নানা উদ্যোগ নিলেন। কিন্তু সব যে থেমে গেল।
বঙ্গবন্ধুর বড় প্রিয় ছিল এই গান- ‘সাধ না মিটিল, আশা না পুরিল’। সোনার বাংলাদেশ গড়ার সাধ পূরণ হয়নি বঙ্গবন্ধুর। সাধ অপূর্ণ রয়ে গেল রেণুরও। তবুও পরাজয় মেনে নেননি তাঁরা। তাঁদের আত্মত্যাগের বদৌলতে খাদে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ তাঁদেরই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের মনোযোগ কেড়ে নিতে পেরেছে। আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ আত্মসম্মান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, নিতে পারে।
টুঙিপাড়া গ্রামের সাধারণ এক নারী রেণু বাংলা ও বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের কাজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করে হয়ে উঠলেন বঙ্গমাতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে শহিদ বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছার অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তাঁর জন্মদিনে জানাই হাজারো কৃতজ্ঞতা, সশ্রদ্ধ সালাম।
ঢাকা/তারা