ঢাকা     বুধবার   ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ০ ১৪৩১

ইরান-সৌদির ঐক্য ও তেল-আবিবের যন্ত্রণা

জব্বার আল নাঈম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৪:২০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
ইরান-সৌদির ঐক্য ও তেল-আবিবের যন্ত্রণা

০১

সৌদি-ইরান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিহাস কেবল টানাপড়েনের নয়, বন্ধুত্বের সম্পর্কও ছিল তাদের অতীত ঐতিহ্যে। অথচ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটি যতোই পরাক্রমশালী হচ্ছে ততোই মানসিক ও কূটনৈতিকভাবে তাদের দূরত্ব বেড়ে চলছে। ইসলামের শেষ খলিফা ও উসমানী সাম্রাজ্যের সাইত্রিশতম অধস্তন আমিরুল মোমেনিন শাহজাদা দ্বিতীয় আবদুল মজিদের (১৮৬৮-১৯৪৪) পতন হয় ৩ মার্চ, ১৯২৪ সালে। এর বছর দুই পরে ১৯২৬ সালে হেজাজ দখলের মাধ্যমে আরব উপদ্বীপের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন আবদুল আজিজ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে ফয়সাল ইবনে তুর্কি ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল সৌদ (১৮৭৬ –১৯৫৩)। আরব বিশ্বে সংক্ষিপ্তভাবে আবদুল আজিজ ইবন সৌদ নামে তিনি পরিচিত। 

সৌদের দখলকৃত ভূমিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে তিনবছরের মাথায় সেটিকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন ইরানের শাহেনশাহ রেজা শাহ পাহলভী (১৮৭৮-১৯৪৪)। তবে দুই দেশের মধ্যে প্রথম কূটনৈতিক সম্পর্কের সংকট দেখা দেয় ১৯৪৩ সালে। মিসরীয় হাজিরা অভিযোগ করেন, পবিত্র কাবাঘরের সম্মান নষ্ট করেছে ইরানি এক হজযাত্রী। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি আবদুল আজিজ ইবন সৌদ। রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে কাবার সম্মান নষ্টকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতি নামে ইরান, সৌদি আরব ও মিসরের মধ্যে। তিন বছরের মাথায় সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে এগিয়ে আসেন ইবনে সৌদ নিজেই। রেজা শাহ পাহলভীকে চিঠি লিখে দুঃখপ্রকাশ করেন।
সম্পর্কের টানাপড়েন চলতে থাকে ষাটের দশক পর্যন্ত। যদিও এর মাঝে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল ধীর গতির। এর মধ্যে নতুন করে সামনে আসে শিয়া-সুন্নি সংকট। যা দেয়াল দাঁড় করায় তেহরান-রিয়াদ সম্পর্কের মধ্যে। তখন মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ইসরায়েলের চলছে চরম বৈরী সম্পর্ক। মুসলিমপ্রধান দেশগুলো ইহুদিবাদের অপসারণ চায় ফিলিস্তিন থেকে। ঠিক সেসময় ইসরায়েলের দিকে ছাতা হাতে এগিয়ে আসেন ইরানের শাহ রেজা পাহলভির ছেলে শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। অবাক হয় সৌদি-মিশর-সিরিয়া ও লেবানন জোট। তবুও ইরানকে ছেড়ে না দিয়ে ধরে রাখতে চাইলেন বাদশা ফয়সাল সৌদ। বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটাতে ১৯৬৬ সালে সফর করেন ফেরদৌসি-হাফিদের দেশে। এর ফলে সম্পর্কের উষ্ণতা কিছুটা বাড়ে। কিছুদিন পর শাহেনশাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিও সৌদি আরব আগমন করে দুইদিকে তীর ছোড়েন। অর্থাৎ সম্পর্ক অব্যাহত রাখলেন ইসরায়েল ও সৌদির সঙ্গে। এতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলেও কিছুতেই কমলো না বাদশা ফয়সালের ক্রোধ। 

ক্রোধ প্রশমিত করতে ফয়সাল গঠন করেন ইসলামিক ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস, অর্গানাইজেশন অব দি ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি) ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ নামের জোট। শাহেনশাহ ইরান এসব জোট গঠনে সমর্থন দেন রিয়াদকে। পাহলভি তখন ভালোভাবে মাথা ঘামানো শুরু করেন আঞ্চলিক রাজনীতিতে। অন্যদিকে আমেরিকা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে মস্কোকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। মাও সে তুং নীতি চূড়ান্ত উচ্চতায় চীনকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনায় ব্যস্ত। কামাল আতার্তুকের বিপ্লব বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেনি তুরস্ক। বিভিন্ন ধর্মযুদ্ধ ও উসমানীয়দের কূটনৈতিক খেলায় হেরে ফ্রান্স আফ্রিকার দেশগুলোর দিকে চোখ রাখে। আধিপত্যবাদ বিস্তার করে চল্লিশটির উপর দেশে। ত্রিশটির মতো দেশে এখনো অব্যাহত আছে সেই ইমানুয়েল ম্যাক্রোর আধিপত্যবাদ। এদিকে যুক্তরাজ্য সূর্য মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত যাচ্ছে তাই পারস্য উপসাগর থেকে তারা প্রত্যাহার করে নেয় নিজেদের। ইরানের রাস্তা আরো প্রশস্ত হতে থাকে। একসঙ্গে মাথা তুলে দাঁড়ায় ইরান-সৌদি আরব। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোও দুই দেশের প্রভাব ও প্রতাপ মেনে নিতে বাধ্য হয়।

০২

প্রশ্ন জাগতে পারে, সৌদি আরব ও ইরান জোটে কখন থেকে বিরোধের সূত্রপাত। এর শুরু ১৯৭৯ ইরান অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ক্ষমতায় আসেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি। নিষিদ্ধি হয় পাহলভিদের পূর্বেকার সব নীতি। সেই সঙ্গে খোমেনির শরীয়া বোর্ড প্রশ্ন তোলেন সৌদি আরবে সৌদ বংশের শাসনের আইনসঙ্গত বৈধতা নিয়েও। মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরিকভাবে বাড়তে থাকে দুই দেশের দূরত্ব। ১৯৮৭ সালে ইরানি হাজিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে। এতে ইরান ও অন্যান্য দেশে হাজিসহ মোট ৪০২ জন নিহত হয়। ক্ষুব্ধ ইরানের ধর্মগুরু সৌদি ওয়াবিদের ধর্মদ্রোহী বলে ঘোষণার সঙ্গে হজ পালন ও পরিচালনা পদ্ধতির অবহেলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এরপর থেকে দীর্ঘ চার বছর ধরে ছিন্ন থাকে কূটনৈতিক সম্পর্ক।

২০০০ সালের দিকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা হামলা চালায় সৌদি আরবে। সৌদিও অভিযান শুরু করে ইরান সমর্থিত বিদ্রোহী দলটির বিরুদ্ধে। ইয়েমেনের সরকারি বাহিনী ও হুতিদের মধ্যকার সংঘর্ষের বাস্তব চূড়ান্ত রূপ হলো দুই দেশের ছায়াযুদ্ধ। ইয়েমেনের উপর চলে সৌদি জোটের হামলা। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ফলে ইয়েমেনের জনগণ কাটাচ্ছে মানবিক সংকটকাল।

সৌদি-ইরান জোটকে এক টেবিলে বসাতে দীর্ঘদিন কাজ করেছে দোহা। সেই দোহার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিশর। কারণ কাতার আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি নামে অভিযোগ তার দেশ হামাসকে অর্থসহায়তা দেয়, ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের পাশে দাঁড়ায়, তিউনিসিয়ার মুভমেন্টে পানি ঢালে, লিবিয়ার বিভিন্ন ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলকে অর্থনৈতিক ইন্ধন দেয়। তুরস্কের এরদোয়ানকে অর্থ ও কৃষি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ জানায় সৌদি জোটের রাজতন্ত্রকে। তবে বেশি বিপদে ফেলে সেক্যুলার মুভমেন্ট নামক রাজনীতি। সৌদির রাজতন্ত্র বারবার বলে আসছে, ইরানের পরমানু কর্মসূচিতে সহযোগিতা ও সমর্থন করে আসছে কাতার। এদিকে ইরান-সৌদি আরব জোটকে কোনোভাবেই সমর্থন করতে চাইছে না ইরসায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাজিমি। সম্প্রতি নিজেদের মধ্যকার বৈরিতা প্রশমনে আগ্রহীও হয়ে উঠেছে দু’দেশ। সন্দেহাতীতভাবে বাগদাদের এমন উদ্যোগকে বলা চলে অঞ্চলটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার পথে বড় এক পদক্ষেপ।

০৩

সৌদি-মার্কিন সম্পর্ক স্থাপিত হয় মূলত ১৯৪৫ সালে। মার্কিন রণতরী ইউএসএস কুইন্সিতে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ ইবন সৌদের সঙ্গে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের ঐতিহাসিক সমঝোতা- বৈঠকের ভিত্তিতে সূচনা হয়েছিল এ সম্পর্কের। এরপরও ঘটেছে ১৯৭৩ সালের তেল অবরোধ, ১৯৯১ সালের পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ, সৌদি নাগরিক কতৃর্ক ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেন হামলা। এরপরও টিকে আছে মার্কিন-সৌদি আরব সম্পর্ক। পারস্য উপসাগর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরাতে চাইছে না ৫ম নৌবহর। এতে সৌদির প্রকাশ্য শত্রুদেশ ইরান তা দখল করে পরিণত হবে অদম্য শক্তিতে। 

এদিকে ইরানকে দমন করতে চাইলে সৌদিকে প্রয়োজন হবে যুক্তরাষ্ট্রের। দীর্ঘদিন ধরে সৌদি অস্ত্র আমদানি করে আসছে ওয়াশিংটন থেকে, ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটলে অস্ত্র বিক্রির সুযোগ নেবে রাইসি। তখন মার্কিন কূটনীতি মার খাবে মধ্যপ্রাচ্যে। স্বার্থে ঘা লাগবে ভারত, চীন ও রাশিয়ার। চীন বৈশ্বিক মোড়ল হতে সব দেশের সঙ্গে সম্পর্কের মালা বিনিময় শুরু করছে। ইরান-সৌদি সমঝোতায় এলে সিরিয়া ও ইয়েমেনে আসবে মানবিক সংকটের সমাধান। সংযুক্ত আরব আমিরাতও চায় না তেহরান ও রিয়াদের বন্ধুত্ব। আমিরাত মুরসিকে সরিয়ে সিসিকে ক্ষমতায় বসাতে বিনিয়োগ করেন বিশাল অর্থ, ২০১৬ সালে এরদোয়ানকে তুরস্কের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে সরাতে বিদ্রোহীদের প্রদান করে অর্থ সহায়ত। আমিরাত এসব করেছে মূলত সৌদি জোটে থেকে। এখন মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি তাদের অর্থনৈতিক কাঠামোয় আমূল পরিবর্তনের কৌশল হাতে নিয়েছে। চাইছে পর্যটন, আর্থিক সেবা এবং প্রযুক্তি খাতে প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়তে। সৌদি যুবরাজ বিনিয়োগকারীদের বলছেনও আরব আমিরাত থেকে সরিয়ে তাদের মূল অফিস রিয়াদ, মক্কা অথবা মদিনায় স্থানান্তর করতে, এতেই চটেছেন আরব আমিরাতে আমির। 

ইরান-সৌদি এক হলে সংকট আরো বাড়বে আমিরাতের। কারণ, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকে প্রধান প্রতিপক্ষ বলে মনে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকা, ইউরোপ, ইসরায়েল ও সৌদির ধারণা ইরানের কাছে রয়েছে আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এসব ক্ষেপণাস্ত্র আরো বেশি শক্তিশালী করেছে তেহরানের ৫ লাখ ৩৪ হাজার সৈন্যকে। এই পরমাণু সক্ষমতা এগিয়ে নিতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছেন পরমাণু বোমার জনক মহসেন ফাখরিজাদেহ। গত বছর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ হত্যা করে তাকে। আর ইরান সেনাবাহিনীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কাসেম সোলাইমানী। তাকেও হত্যা করে মোসাদের সহযোগিতায় আমেরিকায়। এরপরও রাশিয়ার ছায়ায়, চীনের অর্থসহায়তা, তুরস্কের ধর্মীয়পক্ষপাত, আঙ্কারা-তেহরান-ইসলামাবাদ রেল যোগাযোগ সম্পর্কে মেরুদণ্ড শক্ত হওয়ার পাশাপাশি বর্তমান ইরান মধ্যপ্রাচ্যে হয়ে ওঠেছে অপ্রতিরোধ্য।

প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রযুক্তি নির্ভরতা বাড়াতে চাইলে সৌদির পাশে দরকার ইসরায়েলকে। সেই ইসরায়েলের সঙ্গে গত তিন বছরে তাদের চুক্তি হয়েছে দুই হাজার চার শত কোটি ডলারের। যার অধিকাংশই প্রযুক্তি খাতে। ২০১৯ সালে ইরান সমর্থিত হুতিরা সৌদির তেল উৎপাদন কেন্দ্রে বড় ধরনের হামলা চালালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রিয়াদে- থাড ও প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা স্থাপন করে। সম্প্রতি সেই ব্যবস্থা ওয়াশিংটন তুলে নিলে দুশ্চিন্তায় পড়ে রিয়াদ। এগিয়ে আসে ইসরায়েলি রাফায়েল নামক কোম্পানি। সেখানে প্রতিস্থাপন করছে আয়রন ডোম অথবা ইসরায়েল অ্যারো স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি বারাক ইআর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। শুধু যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করছে ইসরায়েল তা না, সিরিয়া ও ইয়েমেনের বিভিন্ন তথ্য সরবরাহের কাজটিও দারুণভাবে করছে। ইরান, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের সকল দেশের গোপন তথ্য দিয়ে সৌদির পাশে থাকছে ইহুদি জাতীয়তাবাদের দখলদার রাষ্ট্রটি। এমনকি সৌদিরও অনেক গোপন তথ্যও রয়েছে তেলআবিবের হাতে। লেবাননকে অস্থিতিশীল যতটা না সৌদি করছে তার চেয়েও বেশি করছে সৌদির পক্ষ হয়ে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা। ইরান-তুরস্কের দূরত্ব সৌদ পরিবারের শুরু থেকেই। সেই দূরত্বে ১৯২৬ সালে আরো পানি ঢালে আবদুল আজিজ ইবন সৌদ। 

সম্প্রতি বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসায় সৌদি-তুরস্কের দূরত্ব কিছুটা কমেছে। তেলআবিবের সঙ্গে এরদোয়ানের রয়েছে বৈরি সম্পর্ক। রাশিয়ার সঙ্গে ইরান ও সৌদির অস্ত্রের ক্রেতা হিসেবে ভালো সম্পর্ক থাকলেও সিরিয়াতে ইরানের পক্ষ নিয়ে বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে মস্কোধিপতি ভ্লাদিমির পুতিন। তারপরও রাশিয়াও চাইছে মধ্যপ্রাচ্যের শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক। এতে রাশিয়ার কথা ও কাজে ভ্যাটো প্রদান করে মার্কিন এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী দখলদার ইসরায়েল। ইসরায়েল কোনোভোবেই চাইছে না মধ্যপ্রাচ্যে আরবদের ঐক্য। আদতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশগুলো ঐক্যের ভেতর ফাটল সৃষ্টিকারী দেশটি এই ইসরায়েল।

নতুন সংকট হলো নিউইয়র্কের কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনছে রিয়াদ। এদিকে ইরানের পরমাণু অস্ত্র নীতি থেকে সরে আসতে চাইছে না তেহরান। এমন দ্বৈত নীতি ও ইসরায়েলের বাঁধা টপকিয়ে সৌদি আরব-ইরানের ঐক্যের মালা বুনন কিভাবে সম্ভব হবে সেদিকেই চোখ রাখছে মধ্যপ্রাচ্য রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

লেখক: কবি ও কথাসাহিত্যিক
 

ঢাকা/তারা


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়