ব্যানার-ফেস্টুন শূন্য আ.লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়
ছবি : শাহীন ভুইয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিভিন্ন দিবস ও সম্মেলন উপলক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীদের টানানো শুভেচ্ছা-অভিনন্দন সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুনগুলো আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্যালয়ের সম্মুখস্থল থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ধানমন্ডিতে সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাত্র দুই দিন আগেও সভানেত্রীর কার্যালয় প্রবেশের সম্মুখস্থল থেকে কার্যালয়ের সামনে রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন দিবস ও সম্মেলন উপলক্ষে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন দেখা যায়। কিন্তু মঙ্গলবার কার্যালয়টির সম্মুখস্থলে কোথাও কোনো ব্যানার, ফেস্টুনের লেশমাত্র নেই। শুধু প্রধান রাস্তা থেকে কার্যালয় প্রবেশের দিকে একটি বাঁশের তোরণ দাঁড়িয়ে আছে। এই তোরণটিও ব্যানার, ফেস্টুনবিহীন।
সভানেত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, এটা রুটিন ওয়ার্ক ঘটনা। এর আগেও নেত্রীর কার্যালয়ের সামনে থেকে সব ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন নামিয়ে ফেলা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা মাঝে মধ্যেই এসব ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক আলোচনায় সভায় আওয়ামী লীগের নাম ব্যাবহার করে এমন সংগঠনগুলোর দোকান-ব্যবসা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সভানেত্রীর কার্যালয় সামনে থেকে সব ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণের জন্য সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশন ক্ষমতাসীন দলের সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে সব ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করে।
সূত্রটি আরো জানায়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামোয় গড়ে তুলতে পুরনো ভবনটি ফেলে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় কর্মকাণ্ডের জন্য ধানমন্ডির কার্যালয়ে ভিড় করেন। এই সুযোগে নাম সর্বস্ব বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আত্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন টানিয়ে চলে যান।
গত রোববার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় শ্রমিক লীগের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে ভুঁইফোঁড় সংগঠনগুলোর ‘দোকান-ব্যবসা’ বন্ধ করে দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এগুলো আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট করছে। এসব প্রতিষ্ঠান জনগণের কাছে, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে কিছু কিছু দোকান খোলা হচ্ছে। এই দোকানগুলো বন্ধ করা দরকার। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এসব দোকানের ব্যবসা চলবে না। এরা দোকান খুলে চাঁদাবাজি করে। এরা একটা দিবস আসলে; এদের উৎসব শুরু হয়ে যায়। এদের চাঁদাবাজিও বন্ধ করতে হবে। এসব দোকানের কোনো আদর্শ ও রাজনীতির লক্ষ্য নেই। এদের লক্ষ্য হচ্ছে, টেলিভিশনে ছবি তোলা, আর চাঁদাবাজি করা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মার্চ ২০১৭/নৃপেন/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম