ঢাকা     রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৩ ১৪৩১

একসঙ্গে ৩০০ আসনে না হলে ইভিএম চায় না জেপি

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  
একসঙ্গে ৩০০ আসনে না হলে ইভিএম চায় না জেপি

ছবি: রাইজিংবিডি

একসঙ্গে ৩০০ আসনে না হলে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চায় না জাতীয় পার্টি-জেপি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩০০ আসনের পুরোটায় কিংবা প্রতিটি আসনের একটি নির্দিষ্টসংখ্যক কেন্দ্রে এই মেশিন ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করেছে দলটি।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে এমন সুপারিশ করে। সংলাপে জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল, ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ও সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপের পর শেখ শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে তার দলের অবস্থান তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

সংলাপে জেপির সুপারিশগুলো হলো
১) নির্বাচন বর্জন, হরতাল, সংঘাত বা অনির্বাচিত ব্যক্তির দেশ পরিচালনায় জাতীয় পার্টি-জেপি বিশ্বাস করে না।
২) বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠেনি। মূলত বৃহৎ রাজনৈতিকদলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা সৃষ্টি করে এবং কোনো না কোনো সময় নির্বাচন কমিশনও এতে জড়িয়ে পড়ে। তাই গণতন্ত্রের চর্চা সঠিকভাবে হয় না। গণতন্ত্রকে রক্ষা বা পাহারা দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৩) জাতীয় পার্টি জেপি নির্বাচনে প্রযুক্তি ব্যবহারের পক্ষে। নির্বাচন কমিশন যদি একসঙ্গে ৩০০ আসনের সব ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করতে না পারে, তাহলে ইভিএম এ নির্বাচন করা সঠিক হবে না। কিছু আসনে ইভিএম হলো কিছু আসনে হলো না, যেটা ডিসক্রিমিনেশন হয়। কোথাও ব্যালট কোথাও ইভিএম এটি উচিত না। যদি ৩০০ আসনের নির্বাচন ইভিএম এ শেষ করা সম্ভব হয় তবে ইভিএম এ ভোটগ্রহণ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ৩০০ আসনের কিছু কিছু ভোটকেন্দ্রে ইভিএম এ নির্বাচন করা যেতে পারে।

৪) জাতীয় সংসদের সীমানা বর্তমানে যেভাবে আছে তা বহাল রাখা যেতে পারে। তারা বড় কোনো পরিবর্তন না করার পক্ষে।
৫) বিতর্ক এড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশনকে মিডিয়ার সামনে কম কথা বলা প্রয়োজন।
৬) নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠু করলে সব দলই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তবে, কোনো দলকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করা নির্বাচনে কমিশনের কাজ নয়।
৭) নির্বাচন কমিশনের কাজ যেন নিরপেক্ষ হয়, এটা দৃশ্যমান হতে হবে।
৮) সব দল ও প্রার্থীর প্রতি নির্বাচন কমিশনের সমান ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।

 ৯) যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধী বা যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি যাতে ভোটকেন্দ্রে ও নির্বাচনে দায়িত্ব না পায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
১০) প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচনের কমিশনের অধীনে না আনলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

গত ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩৯টি দলকেই সংলাপে আসার জন্য সময় দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে বিএনপিসহ নয়টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি। ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছিল ৩০টি দল। এর মধ্যে দুটি দল (জেপি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি) আসতে না পারার কারণ দেখিয়ে পরে সংলাপের জন্য সময় চেয়েছিল। অর্থাৎ ২৮টি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

যে ৯টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি
বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।

২৮টি দল তিন শতাধিক প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। এর মধ্যে ১৬টি দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করার দাবি জানিয়েছে।

/হাসিবুল/সাইফ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়