ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

বিএনপির আন্দোলন: ব্যর্থ না সফল

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ২১ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১২:১৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২২
বিএনপির আন্দোলন: ব্যর্থ না সফল

নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারাদেশে বছরব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। সেসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোকাবিলা এবং হামলার শিকার হয়েছেন তারা। হামলা-মামলার পাশাপাশি দেশের কোথাও কোথাও নেতাকর্মীদের কেউ কেউ মারা গেছেন বলেও জানিয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।

বছরজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের বিভাগীয় ও গুরুত্বপূর্ণ জেলায় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেসব আয়োজন সফল করতে তাদের নেতাকর্মীদের যেমন সরব উপস্থিতি দেখা গেছে, তেমনি বসে থাকেনি সরকারও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখেও পড়তে হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। তাছাড়াও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ‘ঠেকাতে’ বিভিন্ন সমাবেশের আগে-পরে সেসব এলাকায় সড়ক ও নৌ-রুটে ‘ধর্মঘট’ ডাকা হয়। এরপরও সব সমাবেশে প্রচুর নেতাকর্মীর উপস্থিতির কথা জানায় দলটি।

দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় নয়টি সমাবেশের পর শেষটির তারিখ ছিল ১০ ডিসেম্বর। এই দিনে বিএনপির পক্ষ থেকে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের জন্য তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে লিখিত আবেদনও জানিয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে নয়াপল্টনে সমাবেশ না করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করতে ২৬টি শর্তে অনুমতি দেয়। বিএনপি নেতৃবৃন্দ পুলিশের অনুমতির প্রেক্ষিতে স্পষ্টই জানিয়ে দেয়, তারা সমাবেশ নয়াপল্টনেই করবে।

এনিয়ে পুলিশ-সরকার এবং বিএনপির মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক চলে। পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক বক্তব্যও চলতে থাকে সরকারি কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা এবং বিএনপির মধ্যে। এক পর্যায়ে পুলিশের তরফ থেকে সোহরাওয়ার্দীর বিকল্প হিসেবে তুরাগের পাড়ে (বিশ্ব ইজতেমা মাঠ) বা পূর্বাচলে (বাণিজ্যমেলা মাঠ) সমাবেশ করতে বলা হয়। বিএনপি তাদের কথায় অটল থাকে। তবে নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে তারা মানিক মিয়া এভিনিউর প্রস্তাব দিলে, সেটাও প্রত্যাখ্যাত হয়।

১০ তারিখ যতই ঘনিয়ে আসে, বিএনপি এবং পুলিশ প্রশাসন মরিয়া হয়ে উঠে। উত্তপ্ত হয়ে উঠে দেশের রাজনীতি। ৭ ডিসেম্বর দুপুরের পর হঠাৎ করেই নয়াপল্টনের বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট এবং গুলি ছোড়া হয়। বিএনপি নেতাকর্মী, পুলিশ এবং সংবাদকর্মীসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় ঢামেকে মারা যান বিএনপির এক নেতা মকবুল হোসেন।

সেদিন রাতেই নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। বিএনপি অফিস থেকে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাও ছিলেন। এসময় বিএনপি অফিস থেকে বেশ কয়েক বস্তা চাল, পানির বোতল, রান্না করা খিচুড়ি এবং ককটেল-গ্রেনেড উদ্ধার করেছে বলে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়।

বিএনপি অফিসে তল্লাশি চলাকালে অফিসের গেইটের সামনে নেতাকর্মী বেষ্টিত হয়ে মাটিতে বসে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাকে সঙ্গে না নিয়ে পুলিশ ওপরে উঠে কার্যালয়ের সব কক্ষের দরজা ভাঙে এবং ফাইলপত্র-দরকারি কাগজ-কম্পিউটার-আসবাবপত্র-জিয়াউর রহমানের ম্যুরালসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুরের পাশাপাশি নগদ টাকা ও চেকবই নিয়ে যায় বলে দাবি করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এ ছাড়াও পুলিশ নিজেরা অফিসে উঠার সময় হাতের ব্যাগে করে বোমা-ককটেল এসব নিয়ে উঠেন বলেও পরদিন জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জানান দলের মহাসচিব।

৮ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে মিটিং করে সমাবেশের জন্য নয়াপল্টনের বিকল্প আরামবাগ এলাকা চায় বিএনপি। দুপুরের দিকে চিঠি নিতে ফোনকল করা হয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীকে। এ্যানী চিঠি নিতে যাওয়ার পথে বিএনপি অফিসের কাছ থেকে তাকে আটক করা হয় বলে দাবি করেন ফখরুল। এদিকে, এক দিন পর সমাবেশ হলেও সমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়ে টানাপড়েন চলতেই থাকে। ৮ তারিখ রাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরামবাগের প্রস্তাব বাতিল করে মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ বা সায়দাবাদের গোলাপবাগে সমাবেশের জন্য বলা হয়। পুলিশ এবং বিএনপির তরফ থেকে দুটো মাঠই পরিদর্শন করা হয়। অবশেষে বিএনপি গোলাপবাগ মাঠকে তাদের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার ভেন্যু হিসেবে মেনে নেয়।

সেদিনই ভোর তিনটার দিকে বিএনপি মহাসচিব এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে তাদের বাসা থেকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরদিন সকালে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, তাদের দুজনকে ১০ তারিখের সমাবেশের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়নি। দুপুরের পর আবার ডিবিপ্রধান জানান, মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবি থেকে তাদের আদালতে পাঠানোর পর আদালত এই দুই নেতাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পরদিন ১০ ডিসেম্বর, সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীসহ দেশে রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আটক এবং ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ। কী হতে যাচ্ছে, কী ঘোষণা দেবে বিএনপির পক্ষ থেকে? রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যে একটাই ছিল আলোচনার বিষয়। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা এবং উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। এর মধ্যে দুপুরে জরুরি প্রেস কনফারেন্স করে দলটি। সেখানে দলের প্রায় সব শীর্ষ নেতারাই উপস্থিত ছিলেন।

৯ ডিসেম্বর রাত থেকেই গোলাপবাগ মাঠ এবং আশপাশের এলাকা ভরে যায় হাজারো নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে। সারা রাত তারা সেখানে অবস্থান নেয়। পরদিন সকালেই শুরু হয় গণসমাবেশ। প্রধান অতিথি হিসেবে মির্জা ফখরুলের স্থলে ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ ছাড়াও আটক নেতারা ছাড়া প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতারাই সেদিনের গণসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নতুন ইসি গঠন, দলীয় নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ নেতৃবৃন্দ ১০ দফা দাবি জানান। সমাবেশের আগে ই-মেইলে দলের সাত জন সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছে তাদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। কোনও রকম ‘দুর্ঘটনা’ ছাড়াই শেষ হয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জমে উঠছে বিরোধীদলের মাঠের রাজনীতি। বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা বলছেন, সরকারের পতনের যে ১০টি দাবি তারা জানিয়েছেন, সে দাবির পক্ষে তাদের জোটের শরিকদেরও কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি যত যা-ই বলুক না কেন, বাস্তব চিত্র কিন্তু ভিন্ন। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবস্থা অনেকটাই ছন্নছাড়া। বিএনপির তরফ থেকে বারবার কঠোর আন্দোলনের কথা বললেও তাদের শরিকদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট বার্তা বা করণীয় সম্পর্কে এখনও তেমন গাইডলাইন দিতে পারেনি বিএনপি।

নামেমাত্র থাকা বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে ইতোমধ্যে অনেক দল বেরিয়ে গেছে। যদিও তাদের ফের জোটে টেনে আনা হয়েছে অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে। সরকার পতনের আন্দোলনে বর্তমানে যতটা টেম্পোতে রয়েছে বিএনপি, ঠিক তার বিপরীত অবস্থা শরীকদের। দু-একটি দলের ছোটখাটো কর্মসূচি থাকলেও বেশিরভাগ একেবারেই নিষ্ক্রিয়। বিশেষ করে, ২০ দলীয় জোটের সবচেয়ে শক্তিশালী দল জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। এ অবস্থায় জামায়াতসহ শরিক দলের প্রায় সবাই চলমান আন্দোলনে নিজেরা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। সম্প্রতি তাদের দলের আমীর গ্রেপ্তার হওয়ায় আরও বেকায়দায় রয়েছে দলটি।

সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক মাঠের তথ্য বলছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, মোস্তাফা জামাল হায়দারের জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সৈয়দ এহসানুল হুদার বাংলাদেশ জাতীয় দল কিছু কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। মাঝেমধ্যে বিএনপি নেতাদের নিয়ে প্রেস ক্লাব-কেন্দ্রিক কিছু আলোচনা সভা এবং অনুষ্ঠান করেছে খোন্দকার লুৎফর রহমানের জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও ফরিদুজ্জামান ফরহাদের ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।

অপরদিকে, জোটে নামসর্বস্ব দলগুলোর মধ্যে ন্যাপ (ভাসানী), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রেটিক লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি, এনডিপি, পিপলস লীগ, মুসলিম লীগ বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির অস্তিত্ব এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম খুঁজে পাওয়া যায়নি। এসব দলের কারও কারও রাজনৈতিক কার্যালয়ের সন্ধানও পাওয়া যায়নি। বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলনের ক্ষেত্রে এসব দলকে কোনও ভূমিকাও রাখতে দেখা যায়নি।

২০ দলীয় জোটের কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান প্রয়াত শেখ শওকত হোসেন নিলু জোট ত্যাগের পর তার দলের প্রধান করা হয় ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) নিবন্ধিত অংশের নেতৃত্বাধীন জেবেল রহমান গনি জোট ত্যাগ করলে দলটির মহানগর পর্যায়ের নেতা শাওন সাদেকীকে ন্যাপ সভাপতি করে জোটে রাখা হয়। আবদুল লতিফ নেজামীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট জোট ত্যাগ করলে সিলেটের আবদুর রকিবের নেতৃত্বে একটা ইসলামী ঐক্যজোট এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা জোট ত্যাগের পর ক্বারি আবু তাহের নামের একজনকে এনডিপির চেয়ারম্যান করা হয়।

তবে, ২০ দলীয় জোটের প্রকৃত অবস্থা যা-ই হোক, সব দল সক্রিয় আছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। তিনি বলেছেন, সব দলের সাংগঠনিক ক্ষমতা এক নয়। তারপরও আমরা সবাই চলমান বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম ও সক্রিয় আছি। জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপি বিষয়টা বুঝে মূল্যায়ন করবে।

নিষ্ক্রিয় থাকা দলগুলোর আরেকটি ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক মাসে আমরা সাত-আটটি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছি। করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংকটসহ নানাবিধ কারণে বেশি কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হয়নি। এই অবস্থা কেবল আমাদের নয়, বিএনপি ছাড়া জোটের প্রায় সবারই একই অবস্থা।

বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মণ্ডল বলেন, অন্য দলগুলোর মতো আমরা প্রচলিত রাজনীতি করি না। আমরা লোক দেখানো কর্মসূচি পালন করি না। আমাদের রাজনীতির ধরন ভিন্ন। দেশের যেসব জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু হামলার ঘটনা ঘটেছে, নির্যাতিত হয়েছে; সেখানে আমরা গিয়েছি, ভূমিকা রেখেছি।

জোটের অন্যতম শীর্ষ দল এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ সম্প্রতি বিএনপি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। জোট প্রসঙ্গে এসময় তিনি বলেন, জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপি যখন যে আন্দোলনের পরিকল্পনা দিয়েছে, সে অনুযায়ী জোটের অন্য দলগুলো তাদের অবস্থান থেকে কাজ করেছে। এলডিপি গত এক মাসে ঢাকায় দুটি বড় কর্মসূচি পালন করেছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গত ৮ অক্টোবর বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং ২ নভেম্বর একটা বড় সমাবেশ করেছি।

২০ দলীয় জোটের সার্বিক অবস্থা এবং নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জোটের বড় শরিক জামায়াতের প্রচার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র মতিউর রহমান বলেন, আমাদের (জামায়াত) কর্মসূচি আগের মতোই আছে। আমরা দফা-ভিত্তিক কর্মসূচি পালন করছি। তাছাড়া দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে নতুন আমির নির্বাচিত হয়েছেন।

সরকার পতনের এই আন্দোলন, শরিক দলের ভূমিকা, এসব নিয়ে বিএনপির ভাবনা বিষয়ে জানতে চাইলে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়নি, এখনো আছে। আমাদের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক সংলাপে জোটের সব শরিক দল একমত হয়েছে। তারা সরকার পতনের আন্দোলনে যার যার মতো আন্দোলন চালিয়ে যাবে- বলেছে। কারা আন্তরিকতার সঙ্গে সেই আন্দোলনে কাজ করছে, কারা করছে না- সেসব আমরা দেখছি। সবাই আবার ঐক্যবদ্ধ হবে কিনা, সেটা এখনই বলা যাবে না। আন্দোলনে যার যার গতি-প্রকৃতির ওপর সেটা নির্ভর করবে।

বিএনপির চলমান আন্দোলন, সরকারি দল ও ২০ দলীয় জোটের অন্য দলগুলোর ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের গলাবাজি চলে আসছে, চলবে। বিএনপি আর আওয়ামী লীগকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। আমি সব সময় বলি, বিএনপি হচ্ছে আপদ আর আওয়ামী লীগ বিপদ। তারা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এসব আন্দোলনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও মানুষের ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হয়নি, হবে না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ বীর বিক্রম বলেন, আন্দোলনের ফলাফল অঙ্কের মতো নয় যে দুইয়ে দুইয়ে চার হবে। আমরা সরকার পতনের জন্য আন্দোলন করছি। সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি এখন অনেকটা এককভাবে মাঠে অবস্থান করেছে। এই আন্দোলনে আমরা অন্য দল এবং সাধারণ মানুষকে পাশে চাইছি।

চলমান আন্দোলনে জামায়াতের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বলেন, বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য জামায়াতকে আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্য সংগঠনের প্রতিও আমাদের একই আহ্বান। আমরা আন্দোলনের সময় তাদেরকে পাশে পাবো বলে আশা করছি।

বাস্তব অবস্থা যা-ই হোক, সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীকে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। তারা প্রকাশ্যে জামায়াতকে বেশি আলোচনায় না এনে কৌশলে রাজপথের সহযোদ্ধা করতে চাচ্ছে। এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, মাঝে বিএনপির অন্যতম শরিক জামায়াতের সঙ্গে টানাপড়েন থাকলেও, এখন তা আর নেই।

বিএনপি তার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে ২০ দলীয় জোটকে নীরব রেখে জামায়াতকে মাঠে সরব রাখতে চাচ্ছে। হাইকমান্ডের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের বৈঠকে এমন পরামর্শই উঠে এসেছে। জামায়াতও ঘোষণা দিয়ে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নেমেছে। সবার সঙ্গে প্রকাশ্যে সংলাপ করলেও জামায়াত ইস্যুতে এখনও কৌশলী অবস্থানে আছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির। জামায়াত এরই মধ্যে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ১০ দফায় সমর্থন দিয়েছে। বিএনপির গণমিছিলে সমর্থন দিয়েছে। যদিও গণমিছিল কর্মসূচি জামায়াত তাদের ব্যানারে আলাদাভাবে পালন করবে বলে জানা গেছে।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াত নব্বইয়ের স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলন এবং ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনে বড় ভূমিকা রেখেছে। এবারও সরকার পতনের আন্দোলনে শক্তিশালীভাবেই মাঠে নামবে।

বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জোটের কোনও দলের সঙ্গেই আসন ভাগাভাগি কিংবা অন্যকোনো চুক্তিতে আবদ্ধ হবো না আমরা। আলোচনার মাধ্যমেই ন্যূনতম শর্তে সব বিরোধী দলকে একজোটে মাঠে নামাতে চাই। রাজপথের আন্দোলন থেকেই বৃহৎ ঐক্য গড়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন বিএনপির ওই নেতা।

সরকার পতনের আন্দোলন বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের যেকোনও রাজনৈতিক দল আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানাতে পারবে। সরকার পতনের যেকোনও কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যকে আরও বড় করতে চাই। এসব বিষয়ে অনেক দলের সঙ্গে আমাদের অনানুষ্ঠানিক কথাও হচ্ছে।

দলের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের মতে, কেবল বিএনপির জন্য জামায়াত মাঠে নেমে আন্দোলন করছে- বিষয়টা এমন নয়। তারা দেশের মানুষের জন্য, তাদের নিজেদের অস্তিত্বের জন্য, নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থেই আন্দোলন করছে।

এদিকে, সম্প্রতি বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতার ঘোষণা দিয়েছে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। মঞ্চের নেতারা বলেন, তাদের মধ্যে একটি লিয়াজোঁ কমিটি হচ্ছে। সেখান থেকে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষিত হবে। এই প্রসঙ্গে মঞ্চের নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আন্দোলনে জামায়াত থাকবে কিনা- এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তারা তাদের মতো মাঠে থাকবে। বিএনপি নেতারা আমাদের জানিয়েছেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনও ফরমাল অ্যালায়েন্স নেই। জামায়াত পুরনো দল, তারা আলোচনার বাইরে গিয়ে বিএনপির সঙ্গে মাঠে থাকার চেষ্টা করবে। এ ছাড়া জামায়াতের বিষয় নিয়ে বিএনপির আলাদা কৌশলও থাকতে পারে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারি দল ছাড়া দেশের বাকি সবার একটাই দাবি- নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। সে লক্ষে সব গণতান্ত্রিক দল ও সমমনা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবো। বিএনপি সে লক্ষেই কাজ করছে। তবে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আপাতত বসছে না বিএনপি।

বিএনপির অন্য আরেক নেতা বলেন, সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৃহত্তর ঐক্য ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহত্তর ঐক্য ইস্যুতে অনেকগুলো দলের সঙ্গে বিএনপি ইতোমধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে। তারা বলেছে, জামায়াত থাকলে তারা ঐক্যে আসবে না। তবে, এখন পর্যন্ত জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত বিএনপি নেয়নি।

এরিমধ্যে ১৯ ডি‌সেম্বর ‘পর পর দুই টা‌র্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দা‌য়িত্ব পালন কর‌তে পার‌বেন না’সহ রাষ্ট্র কাঠা‌মো মেরাম‌তের ২৭টি রূপরেখা প্রকাশ ক‌রে বিএন‌পি। রূপ‌রেখার বিস্তা‌রিত তু‌লে ধ‌রেন দলটির স্থায়ী ক‌মি‌টির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হো‌সেন।

রূপরেখাতে রয়েছে- একটি ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’ গঠন করে বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল অযৌক্তিক, বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনসমূহ রহিত/সংশোধন করা। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক Rainbow Nation প্রতিষ্ঠা করা।  ‘নির্বাচনকালীন দল-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন করা। পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘উচ্চ কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা। বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ সংশোধন করা। সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করা। বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠন করা। একটি ‘প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রশাসন পুনর্গঠন করা। মিডিয়ার সার্বিক সংস্কারের লক্ষে একটি ‘মিডিয়া কমিশন’ গঠন করা। দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনও আপস না করা। অর্থ-পাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা। সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। Universal Human Rights Charter অনুযায়ী মানবাধিকার বাস্তবায়ন করা।  বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা। ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবেন। মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিল করা। বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া। দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে গড়ে তোলা। ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান করা। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা এবং তাঁদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান। যুবসমাজের ভিশন, চিন্তা ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব-উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া। চাহিদা ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের NHS এর আদলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করা। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।

তবে, চলমান রাজনৈতিক আন্দোলনের সার্বিক দিক বিবেচনা করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আপাতত বিএনপি তাদের দশটি সমাবেশই সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন। সরকার বিভিন্নভাবে বাধা দিয়েও তা ঠেকাতে পারেনি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন আগামী ২০২৩ এর শেষে বা ২০২৪ সালের প্রথমে হবে। এখন যেহেতু দলীয় অনেক কেন্দ্রীয় নেতা মামলায় কারাগারে রয়েছেন, তাই আরও এক বছর পর্যন্ত বিএনপি বা বিরোধী দলগুলো আন্দোলনকে টেনে নিয়ে যেতে পারবেন কি না- সেটাই দেখার বিষয়। যদি গত ৭-৮ মাসের মতো আগামী এক বছরও তারা সফলভাবে রাস্তায় আন্দোলন করে যেতে পারেন, তবেই তাদের আন্দোলনে সফলতা আসবে।

পাশাপাশি বিএনপি যে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে, সেগুলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মেনে নেবেন কিনা, কিংবা বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে মানতে বাধ্য করতে পারবে কিনা- সেটার ওপরই আন্দোলনের সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করছে বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

ঢাকা/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়