ঢাকা     সোমবার   ০৮ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩১

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিলো স্বাধীন দেশকে মেরে ফেলার চক্রান্ত: পরশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১১ আগস্ট ২০২৩  
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিলো স্বাধীন দেশকে মেরে ফেলার চক্রান্ত: পরশ

ফাইল ছবি

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সাধারণ কোনো হত্যাকাণ্ড না। এই হত্যাকাণ্ড ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে জন্মের পরেই মেরে ফেলার দেশি-বিদেশি চক্রান্ত।

তিনি বলেন, সে কারণেই ১৫ আগস্টের হাতে গোনা কিছু খুনিদের, জুনিয়র অফিসারদের বিচার সম্পন্ন হলেও এ ঘটনার নেপথ্যের ষড়যন্ত্র উন্মোচনের বিকল্প নেই। কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র এবং তারপরের পদক্ষেপগুলো সম্পূর্ণ পর্যালোচনা ও নিরীক্ষার লক্ষ্যে একটি স্বাধীন জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন এখন একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস ভবন অডিটোরিয়াম, তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা যুবলীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

পরশ বলেন, আমি আগেও বলেছি, এই হত্যাকাণ্ড ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুতরাং স্বাধীন জাতীয় তদন্ত কমিশনের কাজও অনেক কঠিন। তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটা কাজ; এই কঠিন কাজটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর থেকে লম্বা সময় খুনিরাই দেশ শাসন করেছে, এই জিয়াউর রহমানরা দেশ শাসন করেছে। তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার অনেক তথ্য গায়েব করে দিয়েছে। এই গায়েব করে দেওয়াও সেই সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের নীলনক্সার অংশ।

‘অতএব, আমাদের এমন তদন্ত কমিশন দরকার, যারা যে কোন কঠিন মুহূর্তে পিছপা হবেন না। যেকোনো চাপ মোকাবিলা করতে পারবে। এই তদন্ত কমিশন কাউকে শাস্তি দেওয়ার জন্য না, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না, বরঞ্চ জাতিকে সম্পূর্ণরূপে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য এই তদন্ত কমিশন।’

পরশ বলেন, আমাদের প্রজন্মের সত্য জানার অধিকার আছে, যাতে আমরা সাদাকে সাদা বলতে পারি এবং কালোকে কালো।খুনি জিয়াউর রহমানদের পেছনে দেশে-বিদেশে কে বা কারা কাজ করছে, তা উন্মোচিত হওয়া দরকার। 

তিনি আরও বলেন, ইতিহাস যতই গৌরবময় বা কলঙ্কময় হোক, তা নতুন করে লেখা যায় না। 

‘অতএব, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে ক্ষতি হয়েছে, তার পূরণ কোনদিন সম্ভব নয়। তবে ইতিহাসের সত্য উদঘাটন ও নির্মোহ উপলব্ধি জাতিকে উপকৃত করবে। সে কারণেই জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের খুঁজে বের করা জরুরি জাতীয় কর্তব্য।ইতিহাসের সত্য উন্মোচন করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের এই জরুরি কর্তব্য পালন করতে হবে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রকৃত অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করার জন্যই অতীতের ক্ষতগুলো পরীক্ষা করে দেখা দরকার। তা সম্ভব হলেই কেবল একদিকে যেমন সেই প্রেক্ষাপটে সদ্য স্বাধীন দেশের মূল চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা অনুধাবন করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ নাগরিকের জন্য জাতীয় ইতিহাসের নির্ভেজাল সত্য উন্মোচিত হবে।

‘তাই আমি আবারো বলি, আগস্ট হত্যাকাণ্ড কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। যারা মরণাস্ত্র হাতে সেদিনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল, তাদের পেছনে খুনি জিয়াউর রহমানসহ আরও দেশি ও বিদেশি কুচক্রি মহল ছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শোচনীয় পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাভাবিক যাত্রাপথ কণ্ঠকাকীর্ণ করতে চেয়েছিল। অতএব, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের চিহ্নিত করার আর কোনো বিকল্প নেই।’

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। 

সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সহ-সভাপতি জাফর ইকবাল ও সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসবিরুল হক অনু।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য  আনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইদুর রহমান জুয়েল, শেখ মো. রবিউল ইসলামসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।

/পারভেজ/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়