ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

অক্টোবরের মধ্যে আন্দোলনের সফলতা চায় বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৩:১১, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
অক্টোবরের মধ্যে আন্দোলনের সফলতা চায় বিএনপি

দলের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি ঢাকা ও তার আশপাশের জেলাকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তারা মনে করছেন, তাদের চলমান সরকার পতন আন্দোলনের সফল পরিণতি ঘটাতে হবে আগামী অক্টোবরের মধ্যে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই। 

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলের সিনিয়র নেতারা এ মতামত দেন।

২৮ আগস্ট বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলমান সরকার পতনের আন্দোলন ইস্যুতে কর্মকৌশল ঠিক করতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিবদের মতামত নিতেই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

বৈঠকে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবার মতামত শোনেন। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী জানুয়ারিতে ঘোষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার পতনের চলমান আন্দোলনকে সফল পরিণতিতে রূপ দেওয়ার জন্য বেশিরভাগ নেতা তাদের মতামত দেন। নেতাদের বেশিরভাগই অক্টোবরের মধ্যে সরকারের পতন ঘটাতে হবে বলে মত দেন।

মতামত জানাতে গিয়ে তারা বলেন, সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলায় আদালত যেভাবে সাজা দেওয়া শুরু করেছে, এর প্রতিবাদে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া জরুরি। তাছাড়া, সরকার পতনের চলমান আন্দোলনকে আরও বেশি বেগবান করতে সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি দিতেও মতামত দেন বিএনপির সিনিয়র তিন নেতা।

আবার দলের দুই নেতা বলেন, বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সঠিক পথেই চলছে। বাধ্য না হলে বা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া হরতাল কর্মসূচিতে না গিয়ে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রেখে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলার সাংঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তারা বলেন, আন্দোলনের শেষ সময়ে এসে কোনোভাবেই হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। তাই শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়; আন্দোলন সফল করতে সারা দেশ নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণেও মতামত দেন তারা। 

বৈঠকে বিএনপির বেশিরভাগ নেতা বলেন, চলমান সরকার পতন আন্দোলনকে সফল পরিণতির দিকে নিতে হলে ঢাকা মহানগরের সকল নেতা-কর্মীকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। সারা দেশের নেতা-কর্মীদের ঢাকা এনে কর্মসূচি করে লাভ হয় না। কারণ, তাদের আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়াসহ নানাবিধ ব্যাপার রয়েছে। এছাড়া, ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতা-কর্মীদের অনেকে ঢাকার রাস্তাঘাট ঠিকমতো চিনেন না।

বৈঠকে সিনিয়র এক নেতা বলেন, ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি আন্দোলনের প্রথম ধাপ ছিল। এখন চূড়ান্ত ধাপে যেতে হবে। এই সময়ে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার জন্যও মতামত দেন তিনি। এতে বিভক্তি বাড়ে বলেও মনে করেন ওই নেতা। যার ফলে আন্দোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে একজন নেতা বা তার অনুসারীরা আরেক নেতার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেন। এ বিষয়টিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও বৈঠকে মতামত দেন এক নেতা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে সবার মতামত শুনেছেন। এ নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে, আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন বলে জানান বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান।

মেয়া/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়