ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

দেশে অদ্ভুত শাসন বিরাজমান: রিজভী                

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
দেশে অদ্ভুত শাসন বিরাজমান: রিজভী                

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য নেতারা

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশে অদ্ভুত শাসন বিরাজমান। এটি এমন এক দুঃশাসন, যেখানে এক ব্যক্তির ইচ্ছায় আদালতের কার্যক্রম চলে। এখানে বিধিবদ্ধ আইনি প্রক্রিয়ায় কোনো কাজ হয় না।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সব মামলায় জামিন পাওয়ার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্বেও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ইতোপূর্বে নানাভাবে তাকে আটকে রাখার যে বেআইনি কার্যক্রম দেশব্যাপী প্রত্যক্ষ করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাকডেট দিয়ে পেন্ডিং মামলায় মুন্নাকে আটকে রাখার পর আবারও উচ্চ আদালতে রিট করলে তাকে মুক্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই নির্দেশনা অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জেল কতৃর্পক্ষ সম্পূর্ণ নীরব।

তিনি বলেন, আব্দুল মোনায়েম মুন্না এ মুহূর্তে সব মামলা থেকে জামিনপ্রাপ্ত। অথচ, তাকে কারাগার থেকে বের হতে দিচ্ছে না জেল কর্তৃপক্ষ। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ দেশে মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের স্বাধীনতা, কণ্ঠের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ কোনোটাই নেই। পুলিশ ও আদালত এ ক্ষেত্রে আইনের শাসনের বদলে সরকারের চোখ রাঙানিকেই আমলে নিচ্ছে। আমরা আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ সকল মানবাধিকার সংগঠনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে তরুণদের যে ঢল নেমেছে, তাতে স্নায়ুবিক প্রতিক্রিয়ায় বিহ্বল শেখ হাসিনা। তিনি স্বৈরতন্ত্রের ক্রমাগত বিকাশ ঘটাতে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এখন চলছে নানারকমের অভিসন্ধি। অবৈধ আওয়ামী সরকারের আদালত তাই উঠে-পড়ে লেগেছে বিএনপির নেতাদের সাজা দিতে। এখন গায়ের জোরেই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদেরকে কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বহুদলীয় গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ও নীতিকে সমাধিস্থ করে নব্য বাকশালী কতৃর্ত্ববাদের নতুন আদর্শ, নতুন ভাবধারা, নতুন রুচি ও নীতি প্রতিষ্ঠিত করেছে। যার বাস্তব প্রতিফলন আমরা প্রতি মুহূর্তেই অবলোকন করছি। আবারও একতরফা নির্বাচন করতে পুলিশের পাশাপাশি আদালতকে করা হয়েছে গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে স্বৈরশাসকের পৈশাচিক প্রবৃত্তির লীলাকেন্দ্র।

ইতোমধ্যে বেশকিছু বিএনপি নেতাকর্মীকে সাজানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাক্ষীদের শিখিয়ে-পড়িয়ে তাদের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে। কেউ সাক্ষ্য দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে এনে জোর করে সাক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। দেশের অরাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা বাদ দিয়ে কেবলমাত্র বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলার বিচারকার্য শুরু করে তিন-চার দিন পর পর মামলার তারিখ দেওয়া হচ্ছে এবং রাতেও আদালতের কার্যক্রম চলছে।

যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, হাবিবুল ইসলামা হাবিব, সাইফুল আলম নীরব, রফিকুল আলম মজনু, শেখ রবিউল আলম রবি, তানভীর আহমেদ রবিন, এস এম জাহাঙ্গীর, আলী আকবর চুন্নু, গোলাম মাওলা শাহীন, ইউসুফ বিন জলিল কালু, মুসাব্বির আহমেদসহ সব বন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী।

মেয়া/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়