ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রী ও দুই মেয়র ব্যর্থ: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্নীতির কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ঢাকার দুই সিটির মেয়রও সমানভাবে ব্যর্থ। লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সাত শতাধিক মানুষ মারা গেছেন।  এ কারণে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই সিটি মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যা করছে- তা নগণ্য, লোক দেখানো। বিশেষ করে দক্ষিণ সিটির তেমন কোনো কর্মকাণ্ড নেই। তারা একেবারে নির্বিকার। অথচ ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন মহামারি আকারে ধারণ করেছে।

ডেঙ্গুতে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন করে মানুষ মারা যাচ্ছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরমধ্যে বেশ কিছু শিশু মারা গেছে। সরকারি হিসেবে এই বছর ডেঙ্গুতে ৭১৬ জন মারা গেছে। এরমধ্যে ২০৩ জন ঢাকার বাইরে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি। নিম্নমানের কিট ও সরকারের উদাসীনতার জন্য সত্যিকারভাবে কী পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বা মারা গেছেন, তা আমরা জানি না। তবে সরকারি হিসাবের চেয়ে যে অনেক বেশি-তা সহজে অনুমান করা যায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শুধু ঢাকার বাজেটই ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। যা ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা আত্মসাৎ করেছে। ডেঙ্গু শুরু হওয়ার সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দক্ষিণের মেয়র পরিবারের প্রমোদ ভ্রমণেই প্রমাণিত হয়, এই রোগ নিয়ে শাসকগোষ্ঠীর অবহেলা ও উদাসীনতা। মানবতাহীন অনির্বাচিত গণবিরোধী সরকারের বলেই তারা জনস্বাস্থ্যের প্রতি এ রকম ভ্রুক্ষেপহীন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দুই সিটি করপোরেশন যেহেতু ব্যর্থ হয়েছে, তাই আমরা অবৈধ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দুই মেয়রের পদ্যতাগ দাবি করছি।

ডেঙ্গু দুর্যোগে দেশপ্রেমিক জনগণ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন এবং ড্যাব ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছেন। সেইগুলোতে সবাইকে যুক্ত হয়ে তা সফল করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে মানুষ। লাশের সারি প্রতিদিনই দীর্ঘায়িত হচ্ছে। শিশুরা মারাত্মকভাবে ডেঙ্গু ঝুঁকিতে, মৃতের একটা বড় অংশই শিশু। ৭ দিনের ব্যবধানে ২ সন্তান হারিয়ে একটি পরিবারের ঢাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার খবর কি ব্যর্থ এই সরকারের বিবেককে নাড়া দেয় না? দেবে কী করে, দেশ, দেশের মানুষের ভালো মন্দ নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই। কারণ দেশের জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।