ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

‘পৃথিবী থেকে সরাতে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ১৬ অক্টোবর ২০২৩  
‘পৃথিবী থেকে সরাতে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কারণে বেগম খালেদা জিয়া আজ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। প্রধানমন্ত্রী হয়েও একজন অসুস্থ মানুষের মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের বিষয়ে চিকিৎসক ও আইনজীবীদের মতামতের পরও তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করছেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নত চিকিৎসা থেকে দেশনেত্রীকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাকে পৃথিবী থেকে সরানো।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, দেশবাসী জানে, বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণের কাহিনি। যিনি দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। জীবনে কখনোই তিনি নির্বাচনে পরাজিত হননি। তার নিরন্তর সংগ্রাম ছিল অবরুদ্ধ গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের। তিনি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে নির্ভিক যোদ্ধা। তিনি দেশের অগ্রগতি ও প্রগতির ধারাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তার আহ্বানে ছাত্র-যুবক-নারী পুরুষ নির্বিশেষে জনতা বুক চিতিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করতো না। যিনি আজ স্বৈরশাহীর নিষ্ঠুর আচরণে জীবন-মৃত্যুর টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত।

আরো পড়ুন:

রিজভী বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি মিথ্যা মামলার ফরমায়েশী রায়ে তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর দৃশ্য দেশবাসী মিডিয়ার মাধ্যমে অবলোকন করেছে। দেশনেত্রী হেঁটেই কারাফটক পার হয়েছেন। তাহলে সোয়া দুই বছরে তিনি কেন এত গুরুতর অসুস্থ হলেন? কারণ হিংসা, রক্তপাত, দ্বেষ আর অসততার সংমিশ্রণে যদি রাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করা হয়, তাহলে ভয়ানক অশুভ কিছু ঘটানো যায়। স্বার্থসিদ্ধির জন্য রাজনীতির নামে বিরোধী নেতাকে হত্যার নানা দৃষ্টান্ত আছে দুনিয়াজুড়ে।

রেফারেন্স হিসাবে বলা যায়, রাশিয়ার বিরোধীদলের নেতা আলেকসাই নাভালিন এর চায়ের মধ্যে বিষ মেশানো হয়। চিকিৎসকরা অসুস্থ ইয়াসির আরাফাতেরর শরীরে বিষাক্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ পলেনিয়ামের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন। যা ছিল তার মৃত্যুর কারণ। চীন বংশের সম্রাট হুন কুয়াংশু ক্ষমতাচ্যুত হলে-গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় বিষ খাইয়ে তাকে মারা হয়েছে। সারাবিশ্বে এমন অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে সুস্থ অবস্থায় প্রবেশ করেন। তাহলে কী কারণে এত জটিল দুরারোগ্য ব্যাধিতে তিনি আক্রান্ত হলেন?

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার রোগব্যাধির ভয়াবহতা এখন চরম পর্যায়ে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থারাইটিসে আক্রান্ত। কারাগারে যাওয়ার পরে তার লিভারের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে রোগের কারণে তার পোর্টাল হাইপারটেনশন, পেট ও ফুসফুসে পানি আসা, অন্ত্রের রক্তরক্ষণ হচ্ছে। যার চিকিৎসা এদেশে সম্ভব নয় বলে মেডিক্যাল বোর্ড ইতোমধ্যে পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নেই। তার হৃদযন্ত্রের অবস্থাও ভয়ানক অবনতির দিকে। ইতোমধ্যেই তার রক্তণালীতে একটি রিং বসানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি কিডনি রোগের জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে সবমিলিয়ে দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা জটিল আকার ধারণ করেছে। বারবার তাকে সিসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, দেশনেত্রীকে জীবন—মৃত্যুর পথরেখায় ঠেলে দেওয়া সরকারের হিংসারই বহিঃপ্রকাশ। জনসমর্থনহীন শাসকগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নির্মূলের মহাপরিকল্পনায় লিপ্ত। এ ক্ষেত্রে খাবারের মধ্যে বিষ প্রয়োগ থেকে শুরু করে বিচারের নামে প্রহসনের সাজা দেওয়া এবং গুম-খুন-গুপ্তহত্যার বিবিধ প্রণালী অবলম্বন করেছে সরকার। বন্দী বেগম জিয়াকে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে খাবারের মধ্যে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দেশবাসী মনে করে। বেগম জিয়াকে বিষ প্রয়োগে হত্যার পরিকল্পনাটি ক্লিয়ার হয়েছে লন্ডনে  প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়।     ‘সময় হয়ে গেছে, এত কান্নাকাটি করে লাভ নাই' অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী জানেন বেগম জিয়া কখন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বেন।

/মেয়া/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়