ঢাকা     রোববার   ০৭ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৩ ১৪৩১

এই সরকার থাকলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ থাকবে না: দুদু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৮, ১৯ অক্টোবর ২০২৩  
এই সরকার থাকলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ থাকবে না: দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে বাংলাদেশ রক্ষা করা কঠিন হবে। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশ থাকবে না। সত্যিকারের বাংলাদেশ গড়তে হলে মানবাধিকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ গড়তে হবে। আর সে কারণেই এই সরকার‌কে বিদায় কর‌তে হ‌বে।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ এর উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব ও সাবেক এমপি আহসান হাবীব লিংকন এর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট গায়েবি মামলার রায়ের বি‌রুদ্ধে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দুদু বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা আজ এরকম যে, আপনি স্বাভাবিকভাবে কোনো কাজ করতে পারবেন না। রাস্তায় বের হলে, বাজারে গেলে, চিকিৎসা করতে গেলেও সঠিক চিকিৎসা পাবেন না। মামলায় জামিন নিতে গেলে আপনি জামিন পাবেন না, যদি এই সরকারের কৃপায় না থাকেন। আর যদি আপনি এই সরকারের কৃপায় থাকেন তাহলে আপনাকে ব্যাংক লুট করলেও আপনার বিরুদ্ধে কোনো তদন্তই হবে না।

তিনি বলেন, লুটেরা, গণতন্ত্র হত্যাকারী এরা এখন বাংলাদেশের প্রভুত্ব করছে। আজ যাদেরকে নিয়ে এ অনুষ্ঠান তারা নির্বাচন করলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারাই জিতবে। আর এই কারণে তাদেরকে সাজা দেওয়া হয়েছে। হাবিবুর রহমান হাবিব ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের নেতা, যদি স্বাভাবিক সুষ্ঠু নির্বাচন হয় সে জিতবে। তাকে নির্বাচন করতে দেওয়া যাবে না, এই কারণে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। আহসান হাবীব লিংকন তিনি একটা পার্টির মহাসচিব। একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, একই কারণে তাকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। গায়েবী মামলার সাজা হয়। লুটেরা বা দুর্নীতিবাজদের সাজা হয় না। তারা মন্ত্রী হয়, এমপি হয়, পার্লামেন্টে থেকে দেশের মানুষকে শোষণ করে।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, পাকিস্তানিরা আমাদেরকে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল। সেই জন্য পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। সেই বাংলাদেশকে পাকিস্তানিদের কায়দায় এখন শোষণ করা হচ্ছে। পাকিস্তানের পেতাত্মারা বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ওপর ভর করেছে। এদের থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে স্বাভাবিক জীবন তো দূরে থাক, তার যে উন্নত চিকিৎসার দরকার-সেই চিকিৎসার সুযোগও দিচ্ছে না বর্তমান অবৈধ সরকার। তারেক রহমান সুদূর লন্ডন থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠু ও ভালো নির্বাচন চাচ্ছি বলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাচ্ছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে বলছি। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চাচ্ছি এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন চাচ্ছি। আওয়ামী লীগ একসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল। তত্ত্ববোধক এর জন্য কি করে নাই তারা। এখন কেন তত্ত্বাবধায়ক দিতে ভয় পাচ্ছে। ভয় পাওয়ার কারণ হল তারা জনপ্রিয়তার শূন্যের কোঠায় আছে।

দুদু বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন ঢাকা শহরে অবরোধ করলে মতিঝিলের হেফাজতের মতো করা হবে। আরো অনেকেই বলেছে, হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে। এগুলো সুস্থ চিন্তার লক্ষণ না। এত ভাঙাভাঙি না করাই ভালো। নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন ভালো। নির্বাচনে হার-জিত আছে এতে কষ্ট পাওয়ার কিছু নাই। নির্বাচনের মাধ্যমে যদি পরিবর্তন না হয়ে, অন্য কোনো ভাবে পরিবর্তন হয়, তাহলে সেটা স্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন হবে না। এটা অনেক মর্মান্তিক হবে এবং এর জন্য অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।

/মেয়া/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়