ঢাকা     রোববার   ০৭ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৩ ১৪৩১

‘বউয়ের গয়না বেচে বিএনপির সমাবেশে আসে অনেকে’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১২, ২০ অক্টোবর ২০২৩  
‘বউয়ের গয়না বেচে বিএনপির সমাবেশে আসে অনেকে’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতাদের মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

অনেকে ধান, চাল, পাট, এমনকি বউয়ের গয়না বেচে বিএনপির সমাবেশে আসে বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। 

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন। অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদ (জিসপ)।

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, এত লোক কোথায় থেকে আসে। বিএনপির টাকার উৎস নাকি তিনি খুঁজে দেখবেন। আমরা বলতে চাই, সবাই নিজের টাকা দিয়ে; অনেকে ধান, চাল, পাট, এমনকি বউয়ের গয়না বেচে এই সমাবেশে আসে। আপনার মতো লুটের টাকা বিএনপির কাছে নেই। অতএব, দেশের সব মানুষ নিজের অর্থ দিয়ে আজকে আপনার (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ চায়, নিজের পরিশ্রম দিয়ে আপনার পদত্যাগ চায়, নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আপনার পদত্যাগ চায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে ভূ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আপনি (শেখ হাসিনা) দেশের ১৮ কোটি মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। বাংলাদেশকে পৃথিবীর সব বড় ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর শত্রুতে পরিণত করেছেন। সাদ্দাম হোসেনও আপনার (শেখ হাসিনা) মতো এভাবে দাম্ভিকতা প্রকাশ করেছিলেন। সেই খেসারত ইরাকের মানুষকে দিতে হয়েছে। সেখানে ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। এখনও ইরাকের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়নি।

বরকত উল্লাহ বুলু আরও বলেন, আসাদ একসময় দাম্ভিকতা দেখিয়েছিলেন। সিরিয়ার অবস্থা কী হয়েছে, আপনারা জানেন। গাদ্দাফি দাম্ভিকতা প্রকাশ করেছিলেন, লিবিয়ার অবস্থা কী হয়েছে আপনারা জানেন। আপনি (শেখ হাসিনা) এখন যে দাম্ভিকতা প্রকাশ করছেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলছেন, বাংলাদেশের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। আমাদের সম্পদ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করছি এক দফা দাবিতে। সেই এক দফা হলো—শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এই অবৈধ সংসদ ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত, অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল না করা পর্যন্ত, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এই দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করছি। এই দাবিতে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ ইতোমধ্যে সমর্থন জানিয়েছে। সে কারণে বিএনপির জনসমাবেশে সারা দেশে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আপনি (শেখ হাসিনা) দাওয়াত দিয়েছিলেন, আমরা (বিএনপি) গিয়েছিলাম। আপনি (শেখ হাসিনা) বললেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা কথা দিচ্ছি, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কিন্তু, আপনি ৩০ তারিখের ভোট রাতের অন্ধকারে ২৯ তারিখে করে ফেললেন। আপনার কথা আর এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। বাবার নামে কসম খেয়ে যিনি দিনের ভোট রাতে করে ফেলেন, তার কাছে কিছু আশা করা যায় না। তবে, আজকে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী, মানুষ যে রাস্তায় এসেছে, এর সম্পূর্ণ দাবিদার আপনি (শেখ হাসিনা)। এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, একদিকে শেখ হাসিনা বলছেন, নির্বাচন হবে; অন্যদিকে সিইসি বলছেন, নির্বাচন কখন হবে, কবে হবে, তিনি জানেন না। অতএব, বাংলাদেশ আজকে অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে প্রবেশ করেছে।

জিসপের সভাপতি এম গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহাবুব উদ্দিন খোকন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

মামুন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়