ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারের পদত্যাগ দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ৩ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৯:৫৮, ৩ নভেম্বর ২০২৩
১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারের পদত্যাগ দাবি

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ

আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচিতেও সমর্থন জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে এ দাবি জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির। সমাবেশে চারটি দাবি জানান তিনি। ১০ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি মানা না হলে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকিও দেন মুফতি রেজাউল করিম।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, আজ ৩ নভেম্বর। আজ সরকারের মেয়াদ শেষ। এ কারণেই আজকের দিনকে মহাসমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করেছি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে দাবি করে চরমোনাইর পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আমি চিন্তিত ছিলাম, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট এবং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর যে দমন-পীড়ন ও রাস্তাঘাটে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমাদের এই মহাসমাবেশে আপনারা আসতে পারেন কি না। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি, আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু দিয়েছেন, আল্লাহতায়ালা। আমার মন বলছে, ইসলামী আন্দোলন যে দাবি নিয়ে মাঠে এসেছে, সেই দাবির সঙ্গে আল্লাহর রহমত রয়েছে, এই মহাসমাবেশ সেটিই প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে একটা মেসেজ চলে গেছে, ন্যায্য দাবি আদায়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেছনে দৌড় দেওয়ার মতো দল নয়। জালিমের অত্যাচার সহ্য করে পিছু হটা দল ইসলামী আন্দোলন নয়। যদি জালিমের জুলুম এই বাংলাদেশের ন্যায় প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘাম কিংবা রক্ত ঝরাতে পিছু হটবে না। আমরা হাজার ভয়ভীতি আর বাধার মধ্যেও দাবি আদায়ে প্রস্তুত।

২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো সাজানো নির্বাচন এ দেশে আর হতে দেওয়া হবে না, এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, আজ বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার সংসদে চেপে বসে আছে। বাংলাদেশের মতো একটি সুন্দর দেশকে অসুন্দর দেশে পরিণত করার চক্রান্ত করছে। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ধ্বংস করার নীলনকশা করেছে। আমি আওয়ামী সরকারকে বলে দিতে চাই, আপনারা যা মন চায় তা করবেন আর দেশের মানুষ তা বসে বসে দেখবে এবং নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবে, তা হবে না। সেই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন বাংলার জমিনে আর মানুষ হতে দেবে না। আমি আওয়ামী লীগ সরকারকে জানাতে চাই, আজ বাংলাদেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ দেশের মানুষ আজ এক দফা দাবিতে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। জনগণের এ যৌক্তিক দাবির বিরোধিতা যারা করবে, তারাই এ দেশের শত্রু।

‘পাকিস্তান সরকার যখন টালবাহানা করেছিল, তখন  এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বঙ্গবন্ধু লাখ লাখ মানুষকে নিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আজ আমরা পরিষ্কার ঘোষণা করছি, যদি অংশগ্রহণমূলক ও জাতীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না দেন, তাহলে সামনে অশনিসংকেত অপেক্ষা করছে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, নিরেপেক্ষ নির্বাচন না হওয়ায় বিদেশি শক্তি নাক গলাচ্ছে। আপনি ব্যাকডোর দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করলে আমরা লড়াই করব।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মহাসমাবেশে লাখ লাখ মানুষ এসেছে। কাউকে ভাড়া করে আনা হয়নি। দেশ বাচাঁতে পীর সাহেব যে কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন, জান বাজি রেখে আমাদের নেতাকর্মীরা তা পালন করবে।

শুক্রবার বেলা ১১টার মধ্যেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীতে পূর্ণ হয়ে যায়। দলীয় প্রতীক হাতপাখা নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

নঈমুদ্দীন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়