ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

সরকার জাতিসংঘকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে: রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৭, ৮ নভেম্বর ২০২৩  
সরকার জাতিসংঘকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে: রিজভী

ফাইল ছবি

ক্ষমতায় অ্যাডিক্টেড আওয়ামী লীগ সরকার জাতিসংঘকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আর অবজ্ঞা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের সেন্টিমেন্ট এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংস্থা; গোটা বিশ্বে যে সংগঠন মানুষের অধিকারের প্রশ্নে কাজ করছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যে সংস্থাটি গঠিত হয়েছে, সেটার নাম জাতিসংঘ। যার সদস্য না হলে কোনও দেশের পূর্ণাঙ্গ দেশ হিসেবে কোনও সত্তা থাকে না, সেই জাতিসংঘকেও এ সরকার এখন অবজ্ঞা করছে।

বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের জাতিসংঘকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন। তাদের বক্তব্য-বিবৃতিকে ফালতু হিসেবে বিবেচনা করছেন। এটা কি দেশবাসীর পাশাপাশি বিশ্ববাসী জানছে না? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও তাদের সংগঠনগুলো জানছে না? তাদের এত ক্ষমতার উৎস কোথায়, যেখান থেকে তারা এসব কথাবার্তা বলছেন।

তিনি বলেন, জনগণের সম্মিলিত যে আওয়াজ, সে আওয়াজে আমরা সরকার পতনের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। সেই পতন বেশি দূরে নয়। সেই কারণে ওবায়দুল কাদের এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা চিৎকার করে গলার জোরে টেলিভিশন ক্যামেরার সমস্ত ফোকাস নিজেদের দিকে নিয়ে গলা ফাটিয়ে অনর্গল মিথ্যা বলে চলেছেন। 

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আসলে যখন মানুষ কোনও কিছুতে অ্যাডিক্টেড হয়ে যায়, তখন তার ডানে-বামে-চারপাশে কে বাবা, কে মা, কে ভাই, কে বোন, কে সন্তান- কাউকেই তারা বুঝতে চায় না। অ্যাডিক্টেড মানুষেরা এরকমই হয়। যদি তারা মাদকসেবী হয় বা অন্যান্য কারণে তাদের মধ্যে যদি অ্যাডিকশান চলে আসে, তারা বাবা-মার সাথেও দুর্ব্যবহার করে। কখনও বাবা-মাকে মেরে ফেলে পর্যন্ত। আজকে ক্ষমতায় অ্যাডিক্টেড আওয়ামী লীগের অবস্থাও তেমন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একজন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা একজন কূটনৈতিককে গায়ে হাত তোলার কথা বলে, মারধরের কথা বলে, চড় দেওয়ার কথা বলে। এতে বোঝা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শিষ্টাচার কোন পর্যায়ে গেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আপনি গায়ে হাত দিতে চাচ্ছেন? তারা এসব কথা বলে বুঝতে পারছে না, দেশের ভাবমূর্তি গোটা বিশ্বের কাছে নষ্ট করছে। এই আওয়ামী লীগ গুণ্ডা-পাণ্ডাদের রাজনৈতিক নেতা বানানোর কারণে আজ রাজনীতির এই অবস্থা। 

রিজভী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে যেভাবে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন, সেই কারণে পিটার হাস নিজের এবং অ্যাম্বাসির কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গত বছর রাজধানীর শাহীনবাগে গুম হওয়া নেতাকর্মীর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ শেষে বের হওয়ার সময় তার গাড়ি আটকে হামলা করেছিল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। পিটার হাস বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার মানুষের ভোটের অধিকার মানবাধিকার সুরক্ষার কথা বলছেন, এটা তিনি বলতেই পারেন।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, অবরোধ কর্মসূচিতে পূর্বের ন্যায় সারাদেশে চালানো হয়েছে প্রবল পুলিশি আক্রমণ। পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নেতাদের ধরপাকড় করেছে, যাদের বাড়িতে পায়নি তাদের মা-বাবা ভাই বা পরিবারের অন্য লোকগুলোকে নানাভাবে নাজেহাল হয়রানি করছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমাদের ঠিকানা হয় কারাগার না হয় রাজপথ। সকল প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা বুকে বুলেট বরণ করে নিয়ে রাজপথে দাঁড়াচ্ছে। যতক্ষণ না তাদের লক্ষ্য, দেশের হারানো গণতন্ত্র ফিরে আসে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকবে। আমাদের এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। কারাগার বা রাজপথ এর মাঝখানে আমাদের কিছু নেই। আমাদের নিয়ে যেতে পারে কারাগারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, অত্যাচার করতে পারে; সমস্ত কিছু বরণ করেই আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।

মেয়া/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়