ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৩ ১৪৩১

ফিরে দেখা ২০২৩

চ্যালেঞ্জ থেকে সম্ভাবনার পথে আওয়ামী লীগ

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩  
চ্যালেঞ্জ থেকে সম্ভাবনার পথে আওয়ামী লীগ

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বছরের বেশিরভাগ সময়ে থাকা চাপ আর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বছরের শেষে সম্ভাবনার হাতছানি দেখছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বছরজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে রাজপথে থাকার দলটি এখন নির্বাচনের মাঠে। এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে জিতে সরকার গঠনের করতে পারলে রেকর্ড টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় থাকবে দলটি।

এ বছর বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো আওয়ামী লীগের জন্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির আন্দোলন, ভিসানীতি, বিভশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপসহ বেশকিছু বিষয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। আর বছরের শেষে এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুয়ারে দাঁড়িয়ে দলটি।

বছরের শুরুতে আলোচনায় আসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ২৩ এপ্রিল মেয়াদ পূর্ণ করেন। এক মাস আগেই এ পদে নির্বাচন হয়। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ বেশ গোপনীয়তার মধ্যেই মনোনয়ন দেয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. সাহাবুদ্দিনকে। ফেব্রুয়ারিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিত হন।

আরো পড়ুন:

নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সংকট মেটাতে সংলাপের বিষয়টি উঠে আসে। যদিও শেষ পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপি। তবে বেশিরভাগ দলের সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি।

বছরের মাঝামাঝিতে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও উত্তাপ ছড়িয়েছে।

বছরের একটা সময় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন ভিসানীতি রাজনীতিতে বেশ আলোচিত হয়। এই নীতি নিয়ে বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যও আসে দলের নেতাকর্মীদের থেকে। দলটির নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। এতে ভিসানীতি নিয়ে কোনো সমস্যা দেখছেন না তারা। বরং নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির কারণে তাদের ওপরই ভিসানীতি প্রয়োগ হবে বলে মনে করেন তারা।

বছরের মাঝামাঝিতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জোরেশোরে মাঠে নামে বিএনপি। সেপ্টেম্বর হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত মাঠে ছিল দলটি। আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগও পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বেশ ভীতির পরিবেশ তৈরি করলেও শান্ত ছিল মাঠ। তবে ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে অগ্নিসন্ত্রাস, পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়। এদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহতের পাশাপাশি একজন রাজনৈতিক কর্মীও মারা যায়। এছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হন। পুলিশের হিসাবে, ৫৫টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে ওই দিন। বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় কঠোর হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ সরকার। বছরের শেষদিকে বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা করে রাজপথে সফল আওয়ামী লীগ এখন একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের পথে।

বছরের শেষ দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোট-মহাজোটের হিসেব-নিকাশ নিয়ে গরম হয়ে ওঠে রাজনৈতিক অঙ্গন। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টিকে ২৬টি এবং ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের ৬টি আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের পথে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। দলটি মনে করছে, এর মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ভোট  এবং ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি হবে। এরই মধ্যে নির্বাচন ঘিরে পুরো দেশের উৎবের আমেজ তৈরি হয়েছে।  

 /এসবি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়