ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

সরকারের কাছে আর কোনো দাবি করব না: সেলিমা রহমান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
সরকারের কাছে আর কোনো দাবি করব না: সেলিমা রহমান

রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা

আজ থেকে সরকারের কাছে আমরা আর কোনো দাবি করব না, মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, আমরা লড়াই করেই বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিকে মুক্ত করব। আমাদের এই লড়াই এবং আন্দোলন চলছে, চলবে। 

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ সমাবেশের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন। 

সেলিমা রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ কথা বলতে পারে না, প্রতিবাদও করতে পারে না। মহান ভাষা দিবসের মাসেও তারা কোনো কথা বলতে পারছে না। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে কারাগারে গিয়েছেন বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী। তারা এখনো কারাগারে নির্যাতন- নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। 

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার কারণে সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছে। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার ষড়যন্ত্র করেছে। বর্তমানে তিনি জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তবুও সরকারের কাছে মাথা নত করেননি। গৃহবন্দি থাকার পরও দেশনেত্রী বলছেন, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও। 

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপির এই সিনিয়র নেত্রী  বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয়, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দল। লাঠি-লগি-বৈঠা দিয়ে এরা মানুষ মেরেছে। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ছাত্রলীগের হাতে পিস্তল-লাঠিসহ বিভিন্ন অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তাই, শিক্ষাঙ্গনে একদিকে টেন্ডারবাজি চলছে, অন্যদিকে মারামারি। সারা দেশে খুন-গুম করে বেড়াচ্ছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা।  

সেলিমা রহমান বলেন, সামনে রোজা আসছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ে জনগণ চিন্তিত। জিনিসপত্রের দাম আগুনছোঁয়া। সরকার প্রতিদিন বলছে, দাম কমাবে, কিন্তু দাম কমছে না। এই সরকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করবে না। কারণ, এর সঙ্গে জড়িত সরকার দলীয় লোকজন। তাই, এসব দাবিতে ছাত্রসমাজ, নারীসমাজসহ দেশবাসীকে রাজপথে নামতে হবে। 

সমাবেশে প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। যতদিন এই সরকার ক্ষমতায় আছে, ততদিন দ্রব্যমূল্য কমবে না। মিথ্যা কথা বলার জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলে এই সরকার নোবেল পুরস্কার পাবে। এই সরকার সাংবিধানিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ও সামাজিক অধিকার ধ্বংস করছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী দল। আজ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। তাই, স্বাধীনতা ও সার্বভোমত্ব রক্ষা করতে এবং মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের জন্য পুনরায় আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী দুর্বৃত্তায়নের হাতে থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

আবু নাসের রহমাতুল্লাহ বলেন, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। দেশনেত্রীকে ভয় পায় বলেই তাকে আটকে রাখা হয়েছে। 

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সার্কাসের সরকার গঠন করা হয়েছে। এই সরকারকে বিএনপিসহ দেশের ১৮ কোটি মানুষ বর্জন করেছে। আওয়ামী লীগকে দেশের জনগণ এখন আর বিশ্বাস করে না।

বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক ও কৃষক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম এবং সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন—কৃষকদলের সহ-সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান, ভিপি ইব্রাহিম, তাঁতিদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, জাগপার মির আমীর হোসেন আমু, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকী প্রমুখ।

মেয়া/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়