ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

‘বান্দরবানের ঘটনায় দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভঙ্গুরতা প্রকাশ পেয়েছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৭ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ২১:০৬, ৭ এপ্রিল ২০২৪
‘বান্দরবানের ঘটনায় দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভঙ্গুরতা প্রকাশ পেয়েছে’

পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সীমান্ত ভয়াবহভাবে আক্রান্ত, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাংক লুট হয়েছে, থানা আক্রমণ হয়েছে। কী দুর্ভাগ্য আমাদের, এখন পর্যন্ত আমাদের সরকার বলতে পারছেন না, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অনেকে বলেছেন যে, মিয়ানমারের কট্টর সংগঠন, আবার অনেক বলছেন, জঙ্গিরা এর সঙ্গে জড়িত। যখন কোনও কিছু করতে পারে না, বের করতে পারে না, তখন তারা জঙ্গি খুঁজে বের করে। এই ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা কত ভঙ্গুর।

ফখরুল বলেন, সরকার ভারতের সাথে পানি সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারেনি, মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারেনি। সরকার সবদিক দিয়ে ব্যর্থ। এরা রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে, এরা জনগণকে পথ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। সার্বিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে, শিক্ষাব্যবস্থাকে তারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসের কবলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা চিন্তা করে দেখুন, দেশে এমন কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নেই যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। একটা মাত্র বাকি ছিল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), সেটাও তারা হিংস্রভাবে দখলে নেওয়ার জন্য সবকিছু করছে।

তিনি বলেন, আমরা ছাত্র রাজনীতির বিরোধী নই। আমরা নিজেরাও ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে, তার আগে ভাষা আন্দোলনসহ সব কিছুতে ছাত্ররা জড়িত ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভয়াবহ সন্ত্রাসের রাজত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি করেছে। তাদের ছাত্রলীগ হত্যা-খুন সব কিছু নির্বিবাদে করে চলেছে।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে তরুণ-যু্ব সমাজকে জেগে উঠার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তরুণ সমাজকে বলব, আর কতকাল তোমরা এভাবে নির্যাতিত হবে। আমাদের এই দৃশ্য আর কত দেখতে হবে যে- মা তার ছেলের জন্য কাঁদছেন, ছোট্ট শিশু তার বাবাকে দেখতে চায়, পেতে চায় কাছে। আমাদের তো বয়স শেষ দিকে, এখন তো আমাদের রাস্তায় নেমে কাজ করা সম্ভব নয়। এখন যুবক-তরুণদেরকেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে আসতে হবে যে, আমরা দেশমাতৃকাকে মুক্ত করবো, আমরা মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনব, দেশে সত্যিকারভাবে অন্যায়-অবিচার-টাকা পাচার বন্ধ করে সুশাসনের একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।

তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছি না। আমরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছি। আমরা সবাই দুঃখ-কষ্টের মধ্যে আছি। কিন্তু এই দুঃখ-কষ্টকে আমাদের শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। মানুষের জন্য আমরা সংগ্রাম করব, আন্দোলন করব, বিজয়কে ছিনিয়ে আনব ইনশাল্লাহ।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)-এর উদ্যোগে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া মাহফিল এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারের ঈদ উপহার প্রদান উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান হয়। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।

এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আনহ আখতার হোসেন এবং এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ, এ্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা জামাল সেলিম, আসাদুজ্জামান চুন্নু, নূরে আলম ভুঁইয়া, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল মতিন খান, মো. হানিফ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আখতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে নিহত ৪০ নেতাকর্মী পরিবারের সদস্যদের হাতে তারেক রহমানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

মেয়া/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়