ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব নয়: জি এম কাদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৩, ৬ জুন ২০২৪  
প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব নয়: জি এম কাদের

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদের টানেলের পাশে বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, এই বাজেটকে জনবান্ধব বলা যায় না। পরোক্ষ করের কারণে জনগণের মাথায় করের বোঝা বাড়বে। জনগণের মুক্তির উপায় নেই। পরিবেশের অভাবে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে না, তাতে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে না। এই বাজেটের পর বাংলাদেশ বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়বে।

তিনি বলেন, বাজেট হয়েছে গতানুগতিক। গত কয়েক বছর যা হয়েছে, তার বাইরে বিশেষ কিছু নেই। দেশে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। মূল্যস্ফীতি, প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আছে বেকার সমস্যা। বৈদেশিক মুদ্রা যা আয় করছি, ব্যয় হচ্ছে তার চেয়েও বেশি। রিজার্ভ প্রতিদিন কমছে। এতে টাকার দাম কমছে। এগুলো উত্তরণের কোনো পদক্ষেপ বা উদ্যোগ এই বাজেটে লক্ষ্য করছি না।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বাজেটের আকার করা হয়েছ ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় হচ্ছে ৫ লাখ ৬ হাজার ১৭১ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। ব্যয়ের চেয়ে আয় হচ্ছে অনেক কম। রাজস্ব আয় দেখানো হয়েছ ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঘাটতি। ঘাটতি মেটানো হচ্ছে দেশি ও বিদেশি ঋণ দিয়ে। ঋণ নিয়েই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ থেকে সুদ দেয়ার পরেও ব্যবহার করতে পারছি ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণভাবে ঋণ করতে হচ্ছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয়ও ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এখন ঋণ করা হচ্ছে, তার সুদ ভবিষ্যতে পরিশোধ করতে হবে।

জি এম কাদের বলেন, ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় দেখানো হয়েছে। ৬২ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর, বাকিটা পরোক্ষে। এতে সাধারণ মানুষের ওপর করোর বোঝা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। আয়কর মাত্র ৩৬ শতাংশ, আমদানি শুল্ক ১০.৩ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর ৩৮.১ শতাংশ এবং সমপূরক শুল্ক ১৩.৮ শতাংশ, যা রিকশাওয়ালা থেকে ভিক্ষুকদেরও দিতে হবে।

তিনি বলেন, গরীব মানুষদের বাচানোর জন্য কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। হতদরিদ্র মানুষের জন্য যেটুকু দেওয়া হয় তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। যারা সহায়তা পাওয়ার কথা, অপচয় ও দুর্নীতির কারণে তারা পান না। সরকার যেটা অর্জন বলছে সেটা দুর্নীতি বা লজ্জাজনক।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন,সরকার বলছে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি করা হয়েছে। বাস্তবে ১৩ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট ব্যবহার করা সম্ভব হয়। ১৫ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট দরকার হলেই লোডশেডিং করতে হয়। সারাদেশে লোডশেডিং চলছে।  ১৫ হাজারের পরে বাড়তি ১৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন না হলেও বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হচ্ছে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বসিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ঐসব প্লান্টকে। জনগণের ক্ষতির কারণগুলোকে লাভজনকভাবে দেখানো হচ্ছে। অথচ এখনও সবাই বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাচ্ছে না।

নঈমুদ্দীন/কেআই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়