কল্পনাবিলাসী বাজেট জনগণের কাজে আসবে না: ববি হাজ্জাজ

ববি হাজ্জাজ। ছবি: ফেসবুক
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উচ্চাভিলাষী নয়, কল্পনাবিলাসী উল্লেখ করে তা সাধারণ মানুষের কোনো উপকারে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
শুক্রবার (৭ জুন) বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ববি হাজ্জাজ বলেন, সংকটকালে আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার যে বাজেট পেশ করেছে সেটা তুলনামূলক বিশ্লেষণে তাদের তিন মেয়াদে সবচেয়ে সংকুচিত বাজেট। তাদের স্বভাবসুলভ এই বাজেট উচ্চাভিলাষী নয়, কল্পনাবিলাসী। যা মূলত সাধারণ মানুষের কোনো উপকারে আসবে না।
তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণের যে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্থমন্ত্রী ধার্য করেছেন সেটা অর্জন করতে হলে আজিজ-বেনজীরসহ আওয়ামী গোষ্ঠীর যারা অর্থপাচার করেছেন, লুটপাট করেছেন, দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সেখানে হাত দিতে হবে। প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মোটেও প্রস্তুত নয়, তাদের সেই প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই, অবকাঠামো এবং জনবলও নেই। এটা নিছকই রূপকথার গল্পের মতই মনে করি।
‘বাজেট ঘাটতি মেটাতে যে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা জোগাতে গেলে দেশের ব্যাংক খাত বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে কোনো অর্থায়ন করতে পারবে না। এই বাজেট বাস্তবায়িত হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, কর্মসংস্থান কমবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য আরও নষ্ট হবে,’ বলেও যোগ করেন তিনি।
ববি হাজ্জাজ বলেন, মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়ের সীমা না বাড়িয়ে সরকার মধ্যবিত্তের কষ্টার্জিত হালাল উপার্জনে ভাগ বসিয়েছে। ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালের ওপর দশ শতাংশ অতিরিক্ত কর আরোপের সিদ্ধান্ত কোন যুক্তিতে অর্থমন্ত্রী নিয়েছেন সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। বাজেটের আকার দেখে বিভ্রান্ত হবার কোনো কারণ নেই, প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ঋণের সুদ পরিশোধে। যদিও এবারের ঋণ যোগ করলে আমাদের মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত এতে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি দাবি করে এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে লুটেরা-ঘুষখোরদের উৎসাহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজেটে মোবাইল নেটওয়ার্কের সেবার মান বৃদ্ধি না করে মানুষের কথা বলার ওপর বাড়তি কর বসানো হয়েছে। ২৭টি নিত্যপণ্যের ওপর উৎসে কর কমানো হলেও বাজারে এর প্রভাব পড়বে না। কারণ সরকার কালোবাজারি এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তারুণ্যের জন্য প্রশিক্ষণ, সৃজনশীল কার্যক্রম গ্রহণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কোন সুষ্পষ্ট ধারণা দেন নাই। ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট নিয়েও অর্থমন্ত্রী কোনো কথা বলেন নাই। অপচয় কমিয়ে সরকারি ব্যয় কিভাবে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা হবে সে বিষয়েও এই বাজেটে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই।
/নঈমুদ্দীন/ইমন/এসবি/