ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত: সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ৭ জুন ২০২৪  
বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত: সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট

বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের দাবি উপেক্ষা হওয়ায় নিন্দা জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। তারা শ্রমিকদের রেশন, আবাসন ও চিকিৎসার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে।

শুক্রবার (৭ জুন) বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল এ নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বাজেটের পূর্বে এদেশের শ্রমিকরা বাজেটে এবং চিকিৎসার জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছিলেন। সরকার প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে সেখানে শ্রমিকদের সেই দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য সরকার বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো বরাদ্দ রাখেনি।

শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষার নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, শ্রমিকরা দুস্থ নয় যে দুস্থ ভাতার বরাদ্দকে শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ বলে বিবেচনা করা হবে।

তারা বলেন, কোনো খাতের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। তার ওপরে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশ। যা শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তাহীন করছে অপুষ্টির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এই সংকটপূর্ণ সময়ে রেশন পাওয়া শ্রমিকের অধিকার। সরকার বাজেটে রেশনের জন্য কোনো বরাদ্দ রাখেনি। সরকার বিভিন্ন জায়গায় ভূমিহীনদের জন্য আশ্রায়ন প্রকল্প করছে। কিন্তু শ্রমিকদের পক্ষে কি সংশ্লিষ্ট শিল্প এলাকা ব্যতিত সেই আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা সম্ভব? তাতে কি শিল্প পরিচালিত হবে? তাই শ্রমজীবীদের আবাসন নিশ্চয়তার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা শ্রমিকদের সুরক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রের শিল্পান্নয়নের জন্যও জরুরি। আমরা দেখছি, সরকার চিকিৎসা উপকরণের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা বেসরকারি খাতে চিকিৎসা ব্যয় বাড়াবে। আবার স্বাস্থ্য খাতে সেই অর্থে বরাদ্দ বাড়েনি। ফলে শ্রমজীবীরা আরো বেশি চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়লো।

কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন এবং চাকরির সুযোগ সৃষ্টির দায়িত্ব যে মন্ত্রণালয়ের, শ্রমজীবী সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে সেই মন্ত্রণালয় হওয়ার কথা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাজেট দেখা গেল শ্রম ও কর্মসংস্থানের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রণালয়টি হলো অবহেলিত মন্ত্রণালয়গুলোর একটি। ফলে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কর্ম পরিবেশ ও শর্তের উন্নতির জন্য সরকার কতখানি আন্তরিক তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। বার্ধক্যে শ্রমিকের সুরক্ষা কিংবা কর্মসংস্থান এজন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ নেই। অথচ বাজেট বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের সবচেয়ে বড় অংশ আসবে ভ্যাট থেকে যার যোগান দেবে এদেশের শ্রমজীবী জনগণ। সরকার বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে অথচ শ্রমিকের মজুরির বাৎসরিক বৃদ্ধি মাত্র পাঁচ শতাংশ অর্থাৎ সরকার ঘোষণা দিয়ে শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি, ক্রয় 
সক্ষমতা কমাচ্ছে। বিপরীতে সময় এবং যাতায়াত ব্যয় বাঁচাতে যোগাযোগের মাধ্যম যে মোবাইল ফোন তার খরচও সাত শতাংশ বাড়ছে। যে বিদেশি ঋণে তৈরি অবকাঠামো খুব কমই শ্রমজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজে লেগেছে সেই বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাজেটের সাতভাগের এক ভাগ খরচ হচ্ছে । তাই এটা নির্দিধায় বলা যায়, প্রস্তাবিত বাজেট শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পরিবর্তে, তাদের জীবনে বঞ্চনা আর কষ্টের পরিমাণ বাড়াবে। 

/মামুন/এসবি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়