ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

ভারতের রেল বাংলাদেশে চলতে দেওয়া হবে না: ইসলামী আন্দোলন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৬, ২৮ জুন ২০২৪  
ভারতের রেল বাংলাদেশে চলতে দেওয়া হবে না: ইসলামী আন্দোলন

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন

ভারতের রেল বাংলাদেশে চলতে দেওয়া হবে না বলে হুম‌কি দি‌য়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে সব চুক্তি বাতিলের দা‌বি‌তে আগামী ৫ জুলাই সারাদেশে জেলা শহর ও মহানগরী‌তে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা ক‌রেছে দল‌টি।

ভারতের সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল এবং চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবিতে শুক্রবার (২৮ জুন) বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে বি‌ক্ষোভ সমা‌বে‌শে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আ‌য়ো‌জিত সমা‌বে‌শে তি‌নি ব‌লেন, বর্তমান ডামি সরকার দেশবিরোধী ১০টি সমঝোতা ও চুক্তি করেছে। তাতে বাংলাদেশের ন্যূনতম কোনো স্বার্থ নেই। সব স্বার্থ ভারতের। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। অবিলম্বে ভারতের সাথে দেশবিরোধী সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের রেল চলতে দেওয়া হবে না।

মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ব‌লেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলে দেশের মানুষকে ধোকা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আর দেশটাকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। মালদ্বীপের সরকার নির্বাচনে বিজয়ের পর সে দেশ থেকে ভারতীয় সেনা বিতাড়িত করেছে। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারতকে তোয়াজ করে ক্ষমতায় টিকে আছেন।

ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, অ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাসেম, মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, ডা. মো. শহিদুল ইসলাম, হাসমত আলী, নূরুজ্জামান সরকার, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, ছাত্রনেতা আব্দুর রহমান।

প্রিন্সিপাল মাদানী আরও বলেন, ভারত থেকে ট্রানজিটে আসা ট্রেনে মাদক, বোমা, অস্ত্র নেই, এটা কীভাবে বুঝব। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উন্নত না করে ভারতের সাথে চিকিৎসা চুক্তি করাও চরম ব্যর্থতা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের মানুষ তাকে ভালোবাসেন। ভালো তো বাসবেই। কারণ, আপনি তো বাংলাদেশের নেতা নন, ভারতের তল্পিবাহক।

মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, বিনাভোটে নির্বাচিত সরকারপ্রধানকে যদিও প্রধানমন্ত্রী বলা যায় না, তবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আমরা প্রধানমন্ত্রী বলছি। আপনি ভারতের সাথে চুক্তি করেছেন, ক্ষমতায় থাকার জন্য, দেশ বিক্রির জন্য নয়। এখন আর দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রয়োজন নেই। ছাগল-গরু দিয়েই দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করা যায়। আমাদের ব্যাংকের টাকা কোথায় গেল? পুলিশ প্রশাসন সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছে, তাদের দুর্নীতির সংবাদ প্রচার না করার জন্য। আপনারা দুর্নীতি-দুঃশাসন বন্ধ করুন, সাংবাদিকরা আপনাদের বিরুদ্ধে লেখা বন্ধ করবে।

প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী যে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন, এটাকে সাংবাদিক সম্মেলন বলা যায় না। এটাকে তেলবাজির সম্মেলন বলতে হয়। অর্থমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে যে তথ্য আমাদেরকে দিয়েছেন, তাতে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি টাকা ভারতে পাচার হয়েছে।

তিনি বলেন, ৫০.৬ বিলিয়ন ডলার ভারতে পাচার হয়েছে। অথচ, চায়না বাংলাদেশে অসংখ্য প্রজেক্ট পরিচালনা করলেও চীনে বৈধভাবে গিয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলার। ভারত আমাদের কীভাবে উপকার করে, এটাই তার প্রমাণ।

দ্রব্যমূল্যের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, আলু কিনতে হয় ৭০ টাকায়, কাচা মরিচ ২৫০ টাকায়, ডিমের হালি কিনতে হয় ৬০ টাকায়। এই হলো স্মার্ট উন্নয়নের নমুনা? এ সরকার মানুষকে বাঁচানোর নয়, মারার জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

পরে একটি বিশাল মিছিল বের করে ইসলামী আন্দোলন। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম, পল্টন মোড়, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় পল্টন মোড়ে এসে মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

নঈমুদ্দীন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়