সহিংসতায় হতাহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের দাবি

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট
কোটা সংস্কার আন্দোলনকালে সহিংসতায় নিহত ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং শ্রমিক হয়রানি ও গ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন—সংগঠনের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সহ-সম্পাদক নব কুমার কর্মকার, ইমাম হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, অর্থ সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন প্রমুখ।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা বলেন, গত ১৬ জুলাই থেকে ছাত্র-গণ আন্দোলনে কত মানুষ হতাহত হয়েছে, তার সঠিক হিসাব আজ পর্যন্ত আমরা জানি না। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নিহতের সংখ্যা দুই থেকে আড়াই শত বা আরো বেশি। আহতের সংখ্যা ৬-৭ হাজারের বেশি। অথচ, সরকার এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে নিহত এবং আহতদের তালিকায় আছে শিশু, কিশোর, শিক্ষার্থী ছাড়াও রয়েছে হোটেল ও পর্যটনকর্মী, গাড়িচালক, রিকশাচালক, হকার, পোশাক কর্মী, নির্মাণ শ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, দিনমজুরসহ অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষের নাম। নিহত এবং আহতদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ শ্রমজীবী মানুষ। কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে বা কর্মরত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে জীবন হারিয়েছে বা আহত হয়েছে এসব শ্রমজীবী। পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী মানুষ নিহত, আহত বা গ্রেপ্তার হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে এদের পরিবারের হাজার হাজার সদস্য। সরকার নিহত এবং আহতদের প্রকৃত সংখ্যা স্বীকার করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ না করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও এসব শ্রমজীবী মানুষের পরিবার ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
শ্রমজীবীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। পাশাপাশি, প্রতিটি হতাহতের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের পরিবেশ নিশ্চিত করা, দায়ীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান, নিহতদের পরিবারকে যথাযোগ্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া, আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকনেতারা।
তারা সাধারণ ছুটির সময়ের মজুরি না কাটা, চাকরিচ্যুত না করা এবং বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবীদের কর্মসংস্থান না থাকায় প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মামুন/রফিক