ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২ ১৪৩১

প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত রুখে দিতে হবে: মুফতি ফয়জুল করীম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১১, ১৪ আগস্ট ২০২৪  
প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত রুখে দিতে হবে: মুফতি ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ৫ আগস্ট ফেরাউনের কবল থেকে দেশবাসী মুক্তি পেয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন ছিল সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরাই যেন বৈষম্য সৃষ্টি না করে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক জীবন ও রক্ত দিয়ে সাথে ছিল। এজন্য কোনও বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না। দেশবি‌রোধী ষড়যন্ত্রকারী‌দের প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত ছাত্র-জনতাকে রুখে দি‌তে হ‌বে।

বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে গণহত্যার বিচার এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিশাল বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ব‌লেন, গণহত্যাকারী হাসিনার পুত্র জয় দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য এবং তিনমাসের মধ্যে নির্বাচনের দেওয়ার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দেশদ্রোহী কাজ করেছে। এজন্য শেখ হাসিনা ও জয়ের বিচার হতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের কাছে দেশ ও আওয়ামী লীগের সংবিধান রক্ষার দাবি করে তারা দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্যের পরিচয় দিয়েছে। ভারত বাংলাদেশের সংবিধান এবং নির্বাচন দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না।

‘শেখ হাসিনা বিগত ১৬ বছরে দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। অনেক মানুষ হত্যা করেছে। বিশেষ করে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে মানবতা লঙ্ঘন করেছে। এজন্য খুনি হাসিনা ও তার দলের সকল খুনিদের বিচার করতে হবে’ ব‌লেন মুফতি ফয়জুল করীম।

ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন— দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ড. মাওলানা বেলাল নূল আজিজী, মাওলানা আরিপুল ইসলাম, মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতি মানসুর আহমদ সাকী, ছাত্রনেতা ইউসুফ আহমদ মানসুর, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মুফতি রফিকুল ইসলাম আশরাফী। নগর দক্ষিণ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কেএম শলীয়াতুল্লাহ ও উত্তর দপ্তর সম্পাদক মুফতি নিজামুদ্দিন সমাবেশ পরিচালনা করেন।

মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ছাত্র-জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছে দেশ। মানুষ সুখে-শান্তিতে ও নিরাপদের সাথে বসবাস করবে। সকল ধর্মের সংখ্যানুপাতিকহারে চাকরি নিশ্চিতের দাবি জানান। সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য রুখে দিতে হবে।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, প্রশাসন ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। দুর্নীতি ও অর্থপাচারকারীদের বিচার করতে হবে এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লীগের সব অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, শহিদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আওয়ামী লীগ দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। প্রতিবিপ্লবের চক্রান্ত করে দেশকে সঙ্কটে নিপতিত করতে চাচ্ছে। শেখ হাসিনা ১৪ গোষ্ঠীসহ দেশত্যাগ করেছে। এখন লজ্জা থাকলে তাদের পক্ষ নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, পরাজিত আওয়ামী শক্তি দেশকে অশান্ত করার জন্য সংখ্যালঘুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ভারতের মিডিয়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। সংখ্যালঘুদের ওপর কোনও নির্যাতন হয়নি। যা হয়েছে, তা রাজনৈতিক হামলা।

শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, গণহত্যাকারী সরকারের বিচার করতে হবে। খুনি হাসিনা দেশে ফিরিয়ে এনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। খুনি মন্ত্রী-এমপিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেন, ফেরাউন সরকারের দোসরদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

পরে একটি বিশাল মিছিল মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে বায়তুল মোকাররম পল্টন মোড়, বিজয়নগর গিয়ে সমাপ্ত হয়।

নঈমুদ্দীন/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়